বসন্তের আমেজে ট্রেকিং-এর সুখ, হাতের নাগালে সান্দাকফু
আপনি কি জানেন পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল হিমালয়ের সান্দাকফু? আপনি কি যেতে চান সেখানে?না! না! ভয় নেই। এমনকী পর্বতারোহী হওয়ারও দরকার নেই এর জন্য। শুধু অ্যাডভেঞ্চার প্রেমী হলেই আপনি পৌঁছে যেতে পারেন সান্দাকফু।
কী ভাবছেন? অনেক খরচ? মোটেও তা নয়। খরচ আপনার সাধ্যের মধ্যেই।
সান্দাকফুতে যাওয়া যেতে পারে দু’ভাবে। এক, ট্রেক করে অথবা দুই, গাড়ি বুক করে। যাঁরা ট্রেক করতে ভালোবাসেন, তাঁরা অবশ্যই ট্রেক করে যাবেন। কারণ, এই রাস্তায় মজা কেবল ট্রেকিংয়েই। না হলে গাড়ি তো আছেই।
গাড়ি ভাড়া করতে হবে মানিভঞ্জন থেকে। সান্দাকফু রুটটি শুরু হয় মানিভঞ্জন থেকে। ট্রেক করলে গাইড, পোর্টার এখান থেকেই বুক করতে হবে। আর গাড়িতে গেলে সেই সব প্রশ্ন নেই। তবে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে এসে একরাত এখানে কাটাতে হবে।
পরের দিন সকাল সকাল বেড়িয়ে পরুন। রুটটি যেহেতু নেপাল ও সিঙ্গলীলা ন্যাশনাল ফরেস্ট এর ভিতর দিয়ে যায়, তাই পারমিট করতে হবে। সেটা আপনার গাইড করে দেবে।
মানিভঞ্জন থেকে চলুন টংলুর দিকে। টংলু-তে একরাত কাটাতে হবে। তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পড়ুন। সকালে স্লিপিং বুদ্ধ-এর উপর সূর্য উদয় দেখার এটা এক দারুণ জায়গা। অবশ্য আবহাওয়া একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার এখানে।
যদি কপাল ভালো থাকে ফ্রেম বন্দি করে নিন এই স্বর্গীয় দৃশ্য।
টংলু থেকে পরবর্তী গন্তব্য কালিপখরি। গৌরিবাস পর্যন্ত ট্রেকারদের জন্য খুব ভালো রাস্তা। এরপর কালিপখরি পর্যন্ত রাস্তা প্রায় ৫০-৬০\R° বাঁকা। তাই গৌরিবাস এ একটু জিরিয়ে নিতে পারেন। আপনি যদি এপ্রিলে যান তবে এই রুটে রামধনুর থেকেও বেশি রঙের রডোডেনড্রন-এর সাক্ষী থাকতে পারবেন।
পরের দিন হল এই অ্যাডভেঞ্চারাস ভ্রমণের আসল দিন। আজই আপনি পৌঁছে যাবেন রাজ্যের সর্বোচ্চ চূড়ায়, সান্দাকফু-তে।
পথের শোভা দেখতে দেখতে কখন যে আপনি পৌঁছে যাবেন বুঝতেই পারবেন না। এখানে পৌঁছিয়ে বুঝতে পারবেন আপনি এখন ৩৬৫৮মিটার উচ্চতায় দাঁড়িয়ে আছেন। চাক্ষুষ করুন কাঞ্চনজঙ্ঘা ও বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গ এভারেস্ট-কে একসঙ্গে।
কীভাবে যাবেন:
কলকাতা থেকে ট্রেন বা বাসে নিউ জলপাইগুড়ি। সেখান থেকে গাড়ি রিসার্ভ বা শেয়ার গাড়িতে ঘুম-ঘুম থেকে আবার শেয়ার গাড়িতে মানিভঞ্জন। এখান থেকে শুরু হবে ট্রেকিং।
কোথায় থাকবেন:
মানিভঞ্জন সহ সব জায়গায় ট্রেকার হাট পাবেন। পরিবার নিয়ে গেলে আগে থেকে বুক করে যান।
কী নেবেন:
গাড়ি করে যান বা ট্রেক করে। রুক স্যাক নিয়ে যাওয়াই ভালো। অবশ্যই সব রকম ওষুধ সঙ্গে রাখবেন। জিওলিন, কোকা ৬ আবশ্যিক। ছাতা, টর্চ, শীতের ভালো মোটা পোশাক, যথেষ্ট পরিণামে ড্রাই ফুড।
কী করবেন না:
সান্দাকফু মানে, বিষাক্ত উদ্ভিদের জায়গা। তাই গাইডকে অনুসরণ করুন। গাছ বা ফুলে না জেনে হাত দেবেন না বা গন্ধ নেবেন না। বিপদ হতে পারে।
স্থানীয়দের সম্মান করুন। বিপদে তাঁরাই আপনাকে বাঁচাবে।