বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

আজও নিষ্ঠাভরে বাংলায় পালিত হয় অন্নপূর্ণা পুজো

April 1, 2020 | 2 min read

পার্বতীর অন্য এক রূপ হল অন্নপূর্ণা। অন্নদা নামেও তিনি পরিচিতা। অন্ন কথার অর্থ ধান, আর পূর্ণা-র অর্থ হল পূর্ণ। অর্থাত্‍ যিনি অন্নদাত্রী। শক্তির অপর রূপ হিসেবে হিন্দুদের মধ্যে বিরাজমান এই দেবী। দ্বিভুজা অন্নপূর্ণার এক হাতে অন্নপাত্র ও অন্য হাতে হাতা থাকে। 

দেবীর একপাশে থাকেন ভূমি ও অন্যপাশে থাকেন শ্রী। চৈত্র মাসের শুক্লাপঞ্চমী তিথিতে অন্নপুর্ণার পুজো করা হয়। কালী ও জগদ্ধাত্রী পুজোর মতই তান্ত্রিক মতে এই পুজো হয়ে থাকে।

কাশীতে দেবী অন্নপূর্ণার বিখ্যাত মন্দির রয়েছে। সেখানে প্রতি বছর এই দিনটিতে ধুমধাম করে পুজো হয়ে থাকে। এই মন্দিরে অন্নকূট উত্‍সব বিখ্যাত।

নদীয়া

জনশ্রুতি, নদীয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ভবানন্দ মজুমদার বাংলায় অন্নপূর্ণা পুজোর প্রচলন করেন। শোনা যায় প্রাচীন কালে কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতেও এই পুজো হত। 

ব্যারাকপুর

ব্যারাকপুরের তালপুকুর অঞ্চলে রয়েছে একটি অন্নপূর্ণা মন্দির, যা দেখতে অবিকল দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের মতো। কাশীর অন্নপূর্ণা দর্শনে বিঘ্ন ঘটায় রানি রাসমণির জামাই মথুরমোহন বিশ্বাসের মনে ইচ্ছে ছিল দেবী অন্নপূর্ণার মন্দির প্রতিষ্ঠা করার। তাঁর জীবদ্দশায় না হলেও সেই স্বপ্নপূরণ করেছিলেন তাঁর স্ত্রী, রানি রাসমণির ছোট মেয়ে জগদম্বাদেবী। দক্ষিণেশ্বরে মন্দির প্রতিষ্ঠার ঠিক ২০ বছর পরে ১৮৭৫-এর ১২ এপ্রিল চাণক-এ অন্নপূর্ণা মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। এই চাণকই হল আজকের ব্যারাকপুর। 

বেহালা

অন্নপূর্ণার আরও একটি মন্দির রয়েছে বেহালার বড়িশায়। সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের চন্দ্রকান্ত রায়চৌধুরী তৎকালীন বড়িশা গ্রামে বড়বাড়ির মধ্যে ১৮৫০ সালে একটি পঞ্চরত্ন মন্দিরে অষ্টধাতুর দেবীমূর্তি এবং রুপোর শিবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯৬৮ সালে পুরনো মন্দির ভেঙে নতুন মন্দিরটি তৈরী করা হয়। এবং ১৯৬৯ সালে নতুন বিগ্রহের প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে মন্দিরের আংশিক সংস্কার করা হয়েছে। অন্নপূর্ণা পুজো উপলক্ষে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। 

কলকাতা

কলকাতার কিছু বনেদি পরিবারেও প্রতিষ্ঠিত দেবী অন্নপূর্ণার বিগ্রহ রয়েছে। যেমন বিডন স্ট্রিটের ‘মিত্রাশ্রম’। অতীতে শিমুলিয়ার নিজ গ্রামে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও গিরীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে বাড়িটি কিনেছিলেন বিশ্বনাথ মিত্র। পরে রাস্তাটির নামকরণ হয় বিডন স্ট্রিট। এই পরিবারের বধূ শিবসুন্দরী মিত্র ১৯০৪ সালে নীলকমলেশ্বর শিব ও দেবীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। মূর্তিটি  ম্যানচেস্টারের স্টুয়ার্ট কোম্পানি থেকে তৈরী করিয়ে আনা হয়েছিল।

তেমনই বলরাম দে স্ট্রিটের খান পরিবারের অন্নপূর্ণা পুজো এ বার ৬০ বছরে পা দিল। পুজো শুরু করেছিলেন বৈদ্যনাথ খান। পুজোর আগের দিন হয় অধিবাস। সাবেক প্রথা মেনে হয় ধুনো পোড়ানো, কুমারীপুজো এবং বালক ভোজন। সন্ধ্যায় হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ভোগে থাকে নানা রকমের পদ।  

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #annapurna puja

আরো দেখুন