বাড়ি বাড়ি গিয়ে পেনশনের টাকা পৌঁছে দিচ্ছে ডাকবিভাগ
ডাক অত্যাবশ্যক পরিষেবা হলেও, পরিকাঠামোর অভাবে সব ডাকঘর খোলা নেই এই লকডাউনে। তাই এপ্রিলের শুরুতে মার্চের পেনশন তোলা নিয়ে প্রবীণদের মধ্যে দানা বেঁধেছিল সংশয়। এই পরিস্থিতিতে প্রবীণদের সুবিধা-অসুবিধা মাথায় রেখে এবং ভিড় এড়াতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পেনশনের টাকা পৌঁছে দিচ্ছে ডাকবিভাগ। বয়স ৮০ বছরের বেশি হলে বা কেউ অসুস্থ হলে তাঁর বাড়িতে ডাক কর্মীরা গিয়ে পেনশন পৌঁছে দিচ্ছেন।
একে করোনা সংক্রমণের ভয়, তার উপর লকডাউন। কী ভাবে মাসের পেনশন তুলবেন, ভেবে পাচ্ছিলেন না শান্তিনিকেতনের গুরুপল্লির বাসিন্দা ৮৫ বছরের কৃষ্ণচন্দ্র সরকার। শুক্রবার সকালে তাঁর বাড়িতে হঠাৎ হাজির হন সিউড়ি ডাক বিভাগের আধিকারিক সমর মণ্ডল। পেনশনের টাকা হাতে পেয়ে চোখ ছলছল করে ওঠে অসুস্থ কৃষ্ণচন্দ্রের। তিনি বলেন, ‘এই দুর্দিনে এ ভাবে আমার দপ্তর পাশে দাঁড়াবে তা ভাবতে পারিনি।আমি ডাকবিভাগের কাছে কৃতজ্ঞ।’
![](https://drishtibhongi.in/wp-content/uploads/2020/04/peon.jpg)
বাড়িতে পেনশন পৌঁছনো হবে ৮০ বছরের বেশি মানুষদেরও। তবে অসুস্থ কাউকে বাড়িতে পেনশন পৌঁছনোর আগে তিনি সত্যিই কতটা অসুস্থ, তা যাচাই করা হবে। গৌতমবাবু জানান, ভিড় এড়াতে পেনশন প্রাপকদের ডাকঘরে যাওয়ার আলাদা আলাদা সময় বাঁধার কথা ভাবা হচ্ছে। সময় ফোনে জানিয়ে দেওয়া হবে তাঁদের।
সিউড়ির ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সেহেড়াপাড়ার বাসিন্দা, নবতিপর মুক্তিনারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে হাজির অ্যাসিস্ট্যান্ট পোস্টাল সুপার (বীরভূম ডিভিশন) উজ্জ্বল কুণ্ডু। ঠিক একই সময় রামপুরহাটের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পার্থনারায়ণ বিশ্বাসের বাড়িতে হাজির পোস্টাল সুপার (বীরভূম ডিভিশন) নাজমুল হক চৌধুরী। তাঁদের সঙ্গী আরও কয়েক জন আধিকারিক। দুই ক্ষেত্রেই উদ্দেশ্য, দুই অবসরপ্রাপ্ত টেলিকম কর্মীর হাতে পেনশন তুলে দেওয়া।
শুধু মুক্তিনারায়ণ বা পার্থনারায়ণই নন, করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে আশি বছরের বেশি বীরভূম জেলার মোট ২৫ জন পেনশনভোগীর বাড়িতে পেনশনের টাকা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল ডাকবিভাগ। শুধু তাই নয়, করোনা সংক্রমণে যাঁদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি, সেই প্রবীণ পেনশনভোগীদের জন্য জেলার বিভিন্ন ডাকঘরে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।