বিজেপি যেন গঙ্গাজল – যোগ দিলেই পাপমুক্তি
বিগত কয়েক বছরে রাজ্য তথা ভারতীয় রাজনীতিতে একটি মজার সমীকরণ দেখা যাচ্ছে। বিজেপি অন্যান্য রাজনৈতিক দলের যেসব নেতাদের বিরুদ্ধে একনাগাড়ে অভিযোগ করে গেছে, তারাই বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তারা ক্লিন চিট পেয়ে গেছে। অনেকে তো রসিকতা করে বলছেন বিজেপি যেন গঙ্গাজল, যোগ দিলেই পাপমুক্তি!
দেখে নেওয়া যাক এরকম কয়েকজন জন নেতার তালিকা:
মুকুল রায়
একসময় তাঁকে ডেকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। সেই মুকুল রায়ই কিনা সারদাকাণ্ডে তদন্তের আওতার বাইরে। সারদাকাণ্ডে সিবিআই যখন মুকুল রায়কে ডেকেছিল তখন তিনি ছিলেন তৃণমূলের শীর্ষনেতা। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দেবেন মুকুল- এমন আওয়াজ ওঠার পর থেকেই আর তাঁকে ডাকেনি সিবিআই। এখন মুকুল রায় বঙ্গ বিজেপির অন্যতম মুখ।
হিমন্ত বিশ্বশর্মা
কী ভাবে ঘটনার সঙ্গে গভীর সম্পর্কের প্রমাণ থাকার পরেও তাঁরা বেমালুম খালাস পেয়ে যাচ্ছেন? প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা এবং বর্তমানে অসমের বিজেপি সরকারের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিষয়ে ধর্মতলার ধরনা মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। হিমন্তের বিরুদ্ধে সারদা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত থাকার অকাট্য প্রমাণ পেশ করেন।
অর্জুন সিং
বহু বছর ধরে বিজেপি অভিযোগ করছে ভাটপাড়া এলাকায় তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিং সাধারণ মানুষের ওপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার চালিয়ে আসছে। এছাড়া, দুর্নীতির অভিযোগ করতেও ছাড়েনি। কিন্তু, আশ্চর্যভাবে বিগত লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিতেই আর কোনও অভিযোগ নেই বিজেপির।
মণিরুল ইসলাম
বীরভূমের এই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ ছিল বিজেপির। মূলত যে অভিযোগটি তারা মণিরুলের বিরুদ্ধে করতো, তা ছিল সাম্প্রদায়িকতার। কিন্তু, লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বেরোনোর পর এই নেতাকে দলে নেয় বিজেপি এবং তার পর থেকেই মুখে কুলুপ।
শঙ্কুদেব পান্ডা
এই তৃণমূলের ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে বিজেপির অভিযোগ অনেকদিনের। বিভিন্ন আর্থিক তছরুপে নাম জড়িয়েছে তার। কিন্তু, সেই একই অজানা ফর্মুলায় বিজেপিতে যোগ দিতেই বিজেপি স্পিকটি নট।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া
মার্চ মাসের মাঝামাঝি গোয়ালিয়রের মহারাজ, প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বিজেপিতে যোগ দেন। কয়েকদিন পরেই মধ্য প্রদেশে কংগ্রেস সরকারের পতন ঘটে এবং ক্ষমতায় ফেরে বিজেপি। শপথ গ্রহণের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই জমি কেলেঙ্কারি মামলায় ক্লিন চিট পেয়ে যান জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।