এনআরএস থেকে সন্দিগ্ধ করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ নিয়ে পালালো পরিবার
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নাম ছাপানো একটি প্লাস্টিকের প্যাকেট। আর ওই প্যাকেটের সূত্র ধরেই জানা গেল মৃত ও সন্দেহভাজন করোনা-আক্রান্ত প্রবীণের বিস্তারিত পরিচয় ও তাঁর বাড়ির ঠিকানা। এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক্স-রে করানোর লাইনে অপেক্ষা করার সময়ে মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধের। কিন্তু কাউকে কিছু না-জানিয়েই হাসপাতাল থেকে দেহ নিয়ে পালিয়েছিলেন রোগীর পরিজন।
তবে এক্স-রে রুমে ফেলে যাওয়া ওই প্যাকেটের সূত্রেই নদিয়ার ধানতলায় রোগীর বাড়ির ঠিকানার হদিস পায় এনআরএস-ফাঁড়ির পুলিশ। তার পর পরিবারের সব সদস্যকে হোম কোয়ারান্টিনে রাখা হয়েছে। তবে তার আগেই, সোমবার রাতে মৃতদেহ কবর দেন বাড়ির লোকজন।
পুলিশ জেনেছে, ষাটোর্ধ্ব ওই বৃদ্ধ বেশ কিছু দিন ধরেই ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি জ্বরে পড়েন, তাঁর কাশিও শুরু হয়। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা-১১টা নাগাদ তাঁকে এনআরএসে চিকিৎসা করাতে নিয়ে আসেন বাড়ির লোকজন। তাঁরা প্রথমে রোগীকে নিয়ে যান ইমার্জেন্সিতে। সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে প্রাথমিক ভাবে পরীক্ষা করে সন্দেহ করেন, বৃদ্ধের শরীরে করোনার উপসর্গ রয়েছে।
প্রথমে তাঁকে চেস্ট এক্স-রে করাতে পাঠানো হয়। আর এক্স-রে করানোর লাইনে থাকার সময়েই মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধের। পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, এক্স-রে টেকনিশিয়ানরা এক্স-রে করতে গিয়ে বুঝতে পারেন, বৃদ্ধের দেহে কোনও সাড় নেই। পরে এক চিকিৎসকও পরীক্ষা করে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু তার পরেই হাসপাতালের ভিড় ও ব্যস্ততার সুযোগ বৃদ্ধের দেহ নিয়ে পালিয়ে যান মৃতের বাড়ির লোকজন।
মঙ্গলবার দুপুরে মেডিক্যাল টিম নিয়ে হাজরাপুর গ্রামে মৃত বৃদ্ধের বাড়িতে হাজির হন ধানতলা থানার অফিসার ও কর্মীরা। তাঁরা জানতে পারেন, স্থানীয় কোনও চিকিৎসকের কাছ থেকে ডেথ সার্টিফিকেট পাওয়ার পর রাতেই দেহটিকে কবর দেওয়া হয়েছে। এ দিন মেডিক্যাল টিম মৃতের পরিবারের সবাইকে প্রাথমিক পরীক্ষার পর তাঁদের হোম কোয়ারান্টিনে থাকার নির্দেশ দেয়।
সূত্রের খবর, পরিবারের সদস্যরা কোয়ারান্টিনে আছেন বলে ইতিমধ্যেই স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে এনআরএস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।