লকডাউনে শহরের রাস্তায় মিলবে ট্যাক্সি
লকডাউনের কলকাতাতেও যাতে জরুরি দরকারে ট্যাক্সির দেখা মেলে, তার জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে প্রশাসন। শহরের বিভিন্ন প্রান্তের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে যাতে নীল-সাদা ট্যাক্সি পাওয়া যায় তার চেষ্টা শুরু হয়েছে। গতিধারা প্রকল্পে যে ট্যাক্সি রাস্তায় নেমেছিল তাদের থেকে গাড়ি বাছাই করার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্য পরিবহণ দফতর যোগাযোগ করেছে বিভিন্ন ট্যাক্সি সংগঠনের সঙ্গে। দপ্তর সূত্রে খবর, তৈরি হচ্ছে ডেটাবেস।
১৪ এপ্রিলের পর লকডাউন স্থায়ী হলে জরুরি পরিষেবার কাজে ব্যবহার হবে এই সব ট্যাক্সি। দোকান-বাজারে পণ্য পৌঁছে দেওয়া, হাসপাতাল বা চিকিৎসকদের কাছে যাওয়ার জন্য এই ট্যাক্সি ব্যবহার করা যাবে। বাড়িতে জরুরি পণ্য পৌঁছে দিতেও ট্যাক্সি পাওয়া যাবে। এই ট্যাক্সিগুলো কোথায় দাঁড়াবে, তার প্রাথমিক পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। আপাতত ঠিক হয়েছে শহরের বিভিন্ন যে থানা বা ট্র্যাফিক গার্ড আছে সেখানেই থাকবে ট্যাক্সিগুলো। সূত্রের খবর, ৩০টি জায়গা বাছাই করা হচ্ছে। যেখানে গড়ে ১০টি করে ট্যাক্সি রাখা থাকবে। তবে এখনও জায়গা নিশ্চিত হয়নি।
অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘সরকার আমাদের থেকে ৩০০ ট্যাক্সির তালিকা চেয়েছে। আমরা শুক্রবার গাড়ির নম্বর, মালিক ও চালকের ফোন নম্বর, বাড়ি ও গ্যারাজ কোথায় সেই তালিকা জমা দিয়েছি।’ রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ‘ডেটাবেস তৈরি হয়ে যাবে শনিবারের মধ্যেই। নবান্ন সেটা অনুমোদন করলে তবে ট্যাক্সি রাখা হবে।’
শহরের অন্যতম ট্যাক্সি সংগঠন বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিমল গুহ বলেন, ‘শুধু নীল-সাদা ট্যাক্সি কেন, হলুদ ট্যাক্সিও চালানো যেতে পারে। গড়িয়া, গড়িয়াহাট, বেলেঘাটা, এসপ্ল্যানেড, চিংড়িঘাটা, শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশনের সামনে স্ট্যান্ড তৈরি করা হোক। কাছাকাছি জায়গা থেকে ফোন করুক যাত্রী। একটা ফোন লাইন চালু করে দেওয়া হোক। আমাদের চালকরা ট্যাক্সি নিয়ে সেখানে পৌঁছে যাবে।’
তবে পরিবহণ দপ্তর সূত্রে খবর, তারা প্রাথমিক ভাবে জোর দিচ্ছে অনলাইন ক্যাবের ওপরেই। কারণ বেশির ভাগ গতিধারার গাড়ি তাদের আছে। এ ছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে গাড়ি পরিষ্কার, জীবাণুমুক্ত ও শীতাতপনিয়ন্ত্রিত হওয়া প্রয়োজন। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রতি গাড়িতে চালক ছাড়া তিনজন যাত্রী উঠতে পারবেন। গাড়িতে থাকবে স্যানিটাইজার।
মাস্ক যাত্রীদের জন্য বাধ্যতামূলক। চালকদের জন্য মাস্ক ও গ্লাভস দুই বাধ্যতামূলক। গাড়িতে ওঠার আগে স্ট্যান্ডেই হয়ে যাবে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা। এই সমস্ত কিছুর আয়োজন রাজ্য সরকার করে দেবে। এই বিষয়ে রাজ্য পরিবহণ দপ্তর ও কলকাতা পুলিশ প্রাথমিক আলোচনা সেরে ফেলেছে বলে জানা গিয়েছে।