কেন্দ্রের থেকে প্রাপ্য মিলছে না, প্রবল অর্থসঙ্কটে রাজ্য
অতিরিক্ত আর্থিক সাহায্য নয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাপ্য ৪৩ হাজার ৩০৬ কোটি টাকাই কেন্দ্র মেটায়নি। কোভিড-১৯ ঘিরে সঙ্কটের মোকাবিলায় রাজ্যের ৫০ হাজার কোটি টাকা ঋণ পরিশোধে ছাড় এবং বাজার থেকে অতিরিক্ত ঋণ সংগ্রহের অনুমতিও এখনও দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে বাংলা নববর্ষের মুখে চরম আর্থিক সঙ্কটে রাজ্য।
কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকেই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। নবান্নের একাংশের বক্তব্য, বাজেট বরাদ্দের সিংহভাগ খাদ্যসাথী, কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, নির্মল বাংলা, গ্রামীণ সড়ক প্রকল্পে এবং প্রবীণ-আদিবাসী ও গরিব তফসিলিদের পেনশন দিতে খরচ হয়। কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তা না পেলে গরিব মানুষের জন্য প্রকল্পগুলি চালিয়ে যাওয়াই কঠিন হবে।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার মনে করেন, করোনা-পরিস্থিতিতে আর্থিক সঙ্কটের মোকাবিলায় বাজার থেকে ঋণ সংগ্রহ অন্যতম বিকল্প পথ। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে সারা দেশে মানুষের এই ক্ষমতা তলানিতে। রাজ্যগুলির টাকা ছাপানোর সুযোগ নেই। তাই রাজ্যকে বাঁচতে বাজার থেকেই ঋণ নিতে হবে। আর্থিক-শৃঙ্খলা রক্ষায় জিডিপি’র তিন শতাংশের বেশি ঋণ সংগ্রহের জন্য এফআরবিএম আইনে কেন্দ্রকে অনুমতি দিতে হবে।’
রাজ্যের অর্থ দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের কাছে সঙ্কটের মোকাবিলায় চলতি আর্থিক বছরের জন্য জিডিপি’র পাঁচ শতাংশ অর্থ বাজার থেকে ঋণ সংগ্রহের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু জবাব মেলেনি। পাওয়া যাচ্ছে না গত আর্থিক বছরের শেষ তিন মাসে জিএসটি বাবদ আদায়ের অংশও। যার পরিমাণ প্রায় দু’হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা।
লকডাউনের জেরে এই আর্থিক বছরের শেষ মাস মার্চে রাজ্যের রাজস্ব আদায় মার খেয়েছে। পঞ্চদশ অর্থ কমিশন রাজ্যগুলিকে রাজস্ব ঘাটতির জন্য বিশেষ অনুদান দেওয়ার সুপারিশ করেছিল কেন্দ্রকে। সেই হিসেবে রাজ্যের পাওনা রয়েছে ৫ হাজার ১৩ কোটি টাকা। ১৬৭১ কোটি টাকা করে এপ্রিল, মে, জুন–তিন কিস্তিতে মেটানোর কথা। এপ্রিলে রাজ্য পেয়েছে মোটে ৩১৭ কোটি টাকা। বাকি ১২৫৪ কোটি টাকা কবে মিলবে, কেউ জানে না। এ ছাড়া বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ৩৬ হাজার কোটি টাকা রাজ্যের পাওনা। তা-ও আটকে রাখা রয়েছে।