বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

কবে ফিরতে পারবেন কাজে, ঘোর সংশয়ে কাজের দিদিরা

April 13, 2020 | 2 min read

আনোয়ার শা রোড ও ইএম বাইপাসের ক্রসিংয়ে একটি মস্ত আবাসনে গৃহ-সহায়িকার কাজ করেন সোনাদি। বাড়ি কাছেই, হোসেনপুরে। হেঁটে হেঁটে বাড়ি থেকে কাজে যাওয়া যায়, তাই লকডাউন শুরু হওয়ার সময় তিনি ভেবেছিলেন, তাঁর কাজে যেতে অসুবিধা হবে না। কিন্তু অচিরেই ওই আবাসনে সোনাদিদের প্রবেশই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সোনাদি যে ফ্ল্যাটে কাজ করতেন, তাঁদের তত আপত্তি ছিল না। তাতে কী! 

এই আবাসনেই কাজ করেন ঝুমুর। তাঁর বাড়িও কাছেই, মাদুরদহে। জনতা কার্ফুর পর থেকেই ঝুমুর যে ফ্ল্যাটে কাজ করতেন, তার বাসিন্দারা বলে দেন–কাজে আসতে হবে না। সোনাদি, ঝুমুররা মার্চের মাইনে পেলেও জানেন না, আদৌ ওই আবাসনে আর কাজ করতে দেওয়া হবে কি না।

বৃহত্তর কলকাতায় পাড়ায়-পাড়ায় যে কাজের দিদিরা আসতেন, লকডাউন ওঠার পরে তাঁদের কতজন কাজ ফেরত পাবেন, স্পষ্ট নয় তাঁদের কাছেও। এঁদের অনেকেই দুই ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রেনে কলকাতায় কাজে আসেন। লকডাউন উঠলেও কাজ ফিরে পাওয়া যে কঠিন, তার ইঙ্গিত পাচ্ছেন অনেক ‘কাজের দিদি’ই। সোনাদির কথায়, ‘টাকা দিয়ে বলে দিয়েছে, এখন আর কাজে আসতে হবে না। পরে জানাবে। কোনও কাজের মাসিকেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’

সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং আমজনতার রুটিনে বড় পরিবর্তন এনে দিচ্ছে। শুধু ছোট-বড় আবাসন নয়, অনেক সাধারণ ফ্ল্যাট-বাড়িতেও আপাতত কাজের দিদিদের আসা বারণ। গড়িয়ার অনিতা এলাকারই এক জনের বাড়িতে থাকেন। ওই বাড়ির সঙ্গে আরও চারটি বাড়িতেও পরিচারিকার কাজ করেন। লকডাউন শুরু হওয়ার পর অনিতা যে বাড়িতে থাকেন, তাঁরা জানিয়ে দেন, এই অবস্থায় অন্য কোনও বাড়িতে আর কাজ করা যাবে না।

সোনাদি, ঝুমুর, অনিতাদের কেউ কেউ তা-ও মার্চের টাকা পেয়েছেন, যাঁরা দূর থেকে শহরে আসতেন, তাঁদের অধিকাংশ সেটাও পাননি। অনেকেই লোকের বাড়িতে কাজ করে ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে পড়ান, সংসার টানেন। কী করে তাঁদের চলবে—উত্তর নেই সেই শহরের যার প্রতিটা দিন চলত এঁদের মজদুরিতে। 

লকডাউনের ফলে অংসগঠিত ক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ হারাতে পারেন বলে বণিকসভা থেকে শুরু করে অর্থনীতিবিদরা চেতাবনি দিচ্ছেন। এখনই যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে তাতে এই ‘কাজের দিদি’দের অনেকেরই ভবিষ্যৎ ঘোর অনিশ্চিত।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Lockdown, #domestic helpers

আরো দেখুন