দুই সাংসদকে গৃহবন্দি করার অভিযোগ উড়িয়ে দিল পুলিশ
করোনার আবহে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়ার অভিযোগ উত্তরবঙ্গের দুই বিজেপি সাংসদের। তাঁরা যথাক্রমে জলপাইগুড়ির জয়ন্ত রায় ও আলিপুরদুয়ারের জন বার্লা। বিজেপির দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে ওই দুই সাংসদের নির্বাচনী এলাকায় দুর্গত মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিলি করতে দেওয়া হচ্ছে না। বাধা দিচ্ছে জেলা পুলিশ। শুধু তাই নয়, লকডাউন ভাঙার অভিযোগ এনে ওই দুই সাংসদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রুজু করেছে পুলিশ। গত দু’দিন ধরে কার্যত জয়ন্ত রায় ও জন বার্লাকে পুলিশ মোতায়েন করে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা রাজ্য পুলিশের অতিসক্রিতার অভিযোগ এনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের কাছে লিখিত নালিশ জানিয়েছেন।
যদিও ওই দুই বিজেপি সাংসদের আনা অভিযোগ মানতে চাননি জেলার পুলিশ কর্তারা। উল্টে সাংসদ জন বার্লার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনেছেন খোদ আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ করছেন মাননীয় সাংসদ। গৃহবন্দী করার কোনও ঘটনাই ঘটেনি। করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন ভেঙে আইন অমান্য করায় সতর্ক করা হয়েছে তাঁকে।’ পুলিশ সুপারের অভিযোগের বিরোধিতা করে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘আমার দত্তক নেওয়া বীরপাড়ার দীর্ঘদিনের বন্ধ চা বাগান বান্দাপানির শ্রমিকদের দুর্দশার খবর পেয়ে, আগাম জানিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করতেই পুলিশ অন্যায় ভাবে সাঁড়াশি আক্রমণ করে আমাকে রুখে দেয়। লকডাউন ভাঙার অপরাধে মিথ্যা মামলা সাজানো হয়। আমাকে নজরবন্দি করে রাখা হয়েছে।’
জলপাইগুড়ির বানারহাট থানার লক্ষীপাড়া চা বাগানে কার্যত গৃহবন্দী হয়ে রয়েছেন জন বার্লা। অন্যদিকে, জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় শিলিগুড়ির শিবমন্দির এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। ওই এলাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীর হদিশ মিলতেই, শুক্রবার তিনি জলপাইগুড়িতে আসার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারান্টিনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। ওই অনুরোধ না মানলে সাংসদকে সরকারি কোয়ারান্টিনে যেতে হবে বলে জানান স্বাস্থ্য ও পুলিশ কর্তারা। তাতেই ক্ষুব্ধ বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘ভুলে গেলে চলবে না যে সাংসদ হওয়ার পাশাপাশি আমি একজন চিকিৎসক। আমি জানি, কতটা দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং লকডাউনের অর্থটা কী। কিন্তু যে আচরণ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক কাজ।’