দেশ বিভাগে ফিরে যান

মে মাসে বাড়তে পারে সংক্রমণ, আশঙ্কা কেন্দ্রের

April 18, 2020 | 2 min read

একদিনে দুই চিত্র! কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন যখন মে মাসের প্রথম সপ্তাহে করোনা-সংক্রমণ শিখরে পৌঁছনোর আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, তখন সুখবর দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, লকডাউনের পর করোনা আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধি কমেছে ৪০ শতাংশ!

আপাতভাবে তথ্য দু’টি পরস্পরবিরোধী মনে হলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য থেকে স্পষ্ট, করোনা পরীক্ষা বেড়েছে, সেই সঙ্গে লকডাউনের প্রভাব। অর্থাৎ, সংক্রমণ ধরা পড়ছে, লকডাউনের জেরে ছড়াচ্ছে কম। আর তাই জোড়া অস্ত্রে শুক্রবার অবধি আক্রান্ত কমেছে, বেড়েছে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার অনুপাত। এগুলো সবই শুক্রবার পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে।

কিন্তু ২০ এপ্রিল লকডাউনে কোনও কোনও ক্ষেত্রকে ছাড় দেওয়ার পর এই নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা মুশকিল হবে। সেক্ষেত্রে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে করোনা আক্রান্ত শিখরে পৌঁছনোর আশঙ্কা। আর সেই সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতেই রেপিড টেস্ট বাড়ানো হচ্ছে। আইসিএমআর সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত ন’টা অবধি ৩১,০৮৩টি স্যাম্পেল পরীক্ষা করা হয়েছে, তার মধ্যে ১,৪৪৩ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।

শুক্রবার স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, দেশের মোট করোনা আক্রান্তের ৮০ শতাংশ চটজলদি সেরে উঠছেন, বাকি ২০ শতাংশের ক্ষেত্রে থাকছে শারীরিক জটিলতার সম্ভাবনা৷ তবে, আক্রান্ত কমার হার আশাপ্রদ। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল জানান, লকডাউনের আগে যেখানে ৩ দিনের মধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছিল, সেখানে লকডাউনের পর করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির হার কমেছে ৪০ শতাংশ৷ এর ফলে বর্তমানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে সময় লাগছে ৬.২ দিন৷

গত সাত দিনের তথ্যের ভিত্তিতেই স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এই দাবি৷ লব আগরওয়ালের দাবি, দেশের ১৯টি রাজ্যের অবস্থা আরও ভালো। সেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে সময় লাগছে ৬.২ দিনেরও বেশি। অর্থাৎ এই রাজ্যগুলিতে করোনা প্রতিরোধ ব্যবস্থা খুব ভালো কাজ করছে৷ অন্য দিকে, দশটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে করোনা রোগীর সংখ্যা অপেক্ষাকৃত দ্রুত দ্বিগুণ হচ্ছে, আর সেই তালিকায় রয়েছে মহারাষ্ট্র, গুজরাট, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গ৷

আক্রান্তের হার কমার খবর আশার আলো দেখালেও চিন্তায় রাখছে ১০০ জন করোনা রোগীর মধ্যে ২০ জনের শারীরিক জটিলতার আশঙ্কা! পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুভব করেই লব আগরওয়ালের সতর্কবার্তা, ‘সেরে ওঠার পরিসংখ্যান হয়তো অন্য অনেক দেশের তুলনায় ভালো৷ তবে আমাদের আরও ভালো করতে হবে, কারণ কোনও মৃত্যুই কাম্য নয়৷’ আর তাই করোনা মোকাবিলায় যথাযথ ব্যবস্থা যে নেওয়া হচ্ছে, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। যুগ্মসচিবের দাবি, ‘দেশে মোট ১ লক্ষ ৭৩ হাজার আইসোলেশন বেড তৈরি রয়েছে৷ চলছে কোভিড হাসপাতাল তৈরির কাজ৷’ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সুপারিশ, গোটা দেশ যখন করোনা যুদ্ধে ব্যস্ত, ছোটখাটো অসুস্থতায় হাসপাতালে না গিয়ে টেলিমেডিসিনের সাহায্য নিন৷

এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রাজ্য থেকে অভিযোগ আসছে, অন্যান্য রোগে আক্রান্তরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না৷ শুক্রবার রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের বার্তা, ‘যারা করোনা রোগী নন, অন্য ক্রনিক রোগে ভুগছেন, তাঁদের চিকিৎসা করতেই হবে। সব হাসপাতালের সুপারদের এটি সুনিশ্চিত করতে হবে৷’ 

কেন্দ্রীয় সংস্থা আইসিএমআর জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকে তারা বিসিজি ভ্যাকসিন সমীক্ষার কাজ শুরু করবে৷ আইসিএমআরের রামন গঙ্গাখেড়করের কথায়, ‘এই সমীক্ষায় জানতে পারব, বিসিজি ভ্যাকসিন স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার কাজে লাগবে কি না৷ করোনার ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন কতটা ফলপ্রসূ, নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি না৷ এটা টিবি রোধ করতে পারে না, তার প্রকোপ থেকে সুরক্ষা দেয় মাত্র৷’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#lock down, #doubling rate, #India, #Coronavirus

আরো দেখুন