করোনা মোকাবিলায় বিশ্ববন্দিত হচ্ছেন মহিলা নেত্রীরাই
কয়েকদিন আগে একটি ফটো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষত হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হয়েছে। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে যেখানে দেখা যাচ্ছে করোনা মোকাবিলায় মানুষের পাশে থেকে লড়ছেন এবং নেতৃত্ব দিচ্ছেন মহিলারাই। এই ছবিতে যেমন আছেন জার্মান চ্যান্সেলর কিংবা নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী, সেরকমই ছবিতে স্থান পেয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে, কেন এমন বলা হচ্ছে যে মহিলারাই করোনা মোকাবিলায় সবচেয়ে ভাল নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আসলে, মহিলারা কোমল হৃদয়ের হন বলে এরকম পরিস্থিতিতে সকলের মঙ্গলের জন্য তারা বলিষ্ঠ নেত্রী হয়ে ওঠেন। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সহানুভূতির সঙ্গে কাজ করেন তারা।
আসুন দেখে নিই কিছু উদাহরণ:
জার্মানি
আঞ্জেলা মার্কেলকে সকলে প্রশংসা করছে ঠিক সময়ে পরিস্থিতি সামলে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা কমাতে পারার জন্য। খুব তাড়াতাড়ি পরিস্থিতি কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল, যেমন স্কুল বন্ধ করা, ডে কেয়ার সেন্টার বন্ধ করা, বড় জমায়েত বন্ধ করা, সীমান্ত বন্ধ করা ইত্যাদি।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন পর্যটন বন্ধ করেন এবং চূড়ান্ত স্তরের লকডাউন চালু করেন মার্চে। প্রয়োজনীয় পরিষেবা ছাড়া সব বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে প্রায় ৫০ লক্ষের দেশে আক্রান্ত হয় ১৪০৯ জন এবং ১১ জন মারা যায়। এবার তারা ত্রিস্তরীয় স্তরের লকডাউনে নামবে।
তাইওয়ান
২.৪ কোটি জনসংখ্যার এই দ্বীপে ৩৯৫ জন করোনা আক্রান্ত হন এবং মারা যান ৬ জন। রাষ্ট্রপতি সি ইং ওয়েন খুব তাড়াতাড়ি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন ও তাতে কাজ হয়।
আইসল্যান্ড
প্রধানমন্ত্রী ক্যাট্রিন জ্যাকবসডটিরের দেশে ১০ শতাংশ মানুষ করোনা আক্রান্ত হন। সেখানে ২০ জনের বেশী জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয় কিন্তু লকডাউন ঘোষণা হয়নি। মাত্র আটজন মারা যান।
ফিনল্যান্ড
প্রধানমন্ত্রী সানা মেরিন বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠা রাষ্ট্রপ্রধান। সম্প্রতি এক পোলে দেখা যায় সেখানে এই মহামারিতে আক্রান্ত ৩৪৮৯ জন ও মারা যায় ৭৫ জন।
নরওয়ে
প্রধানমন্ত্রী এরনা সোলবার্গ গত সপ্তাহে ঘোষণা করেন করোনার জন্য জারি করা কিছু নিষেধ এবার শিথিল করা হবে।
ডেনমার্ক
প্রধানমন্ত্রী মেটি ফ্রেডারিক্সেন মার্চের প্রথমেই স্কুল বন্ধ করেন, জমায়েত নিষিদ্ধ করেন ও সীমান্ত বন্ধ করেন ১৪ই মার্চ। ১৫ই মার্চ সরকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের বেতনের ৭৫ শতাংশ ও মজুরদের মজুরির ৯০ শতাংশ।
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বাংলা দেশের প্রথম রাজ্য যারা ২০০ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদকে নিয়ে প্রথম গ্লোবাল অ্যাডভাইসরি বোর্ড গঠন করে। স্বাস্থ্য কর্মী, আশা কর্মী, আইসিডিএস কর্মী, পুলিশ কর্মী, কুরিয়ার কর্মী ও তাদের পরিবারের জন্য ১০ লক্ষের স্বাস্থ্যবীমা করে দিয়েছে। রাজ্যের ৮ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দিচ্ছে। প্রচেষ্টা প্রকল্পে অসংগঠিত ক্ষেত্রের মজুরদের ১ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। ভিন রাজ্যে আটকে পরা শ্রমিকদের স্নেহের পরশ প্রকল্পে একই টাকা দেওয়া হচ্ছে।