চাকা না ঘোরায় নষ্ট হচ্ছে যন্ত্র, চিন্তায় বাস-ট্রাক মালিকরা
লকডাউনের জেরে বন্ধ আছে বাস, ট্রাক চলাচল। অনেক দিন চলাচল না করায় বাস, ট্রাকগুলিতে নানা ধরনের যান্ত্রিক গোলযোগের সম্ভাবনা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময় ব্যাটারি বসে যাওয়া, টায়ার নষ্ট হযে যাওয়া, ব্রেক, গিয়ারের সমস্যা সহ নানা যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা যেতে পারে। যা নিযে চিন্তা বাড়ছে বাস, ট্রাক মালিকদের।
লকডাউন ওঠার পর বাস চালাতে যাতে কোনও সমস্যা না হয তার জন্য প্রতিটি ডিপোতে প্রতিদিন নিয়ম করে কয়েক ঘণ্টার জন্য সমস্ত গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট করছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (এনবিএসটিসি)। পর্যায়ক্রমে বাসের যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করছেন মেকানিক্যাল বিভাগের কর্মীরা। তবে সব বাস, ট্রাক মালিকরা সেই সুযোগ পাচ্ছেন না। ফলে লকডাউন উঠলেও ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
এনবিএসটিসির চিফ ইঞ্জিনিয়ার সুবীর দে রায় বলেন, দীর্ঘদিন গাড়ি না চললে ব্যাটারি পুরোপুরি বসে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নতুন ব্যাটারি লাগাতে হবে। দীর্ঘদিন ইঞ্জিন স্টার্ট না হলে গাড়ির ট্যাংকে থাকা জ্বালানির উপর আস্তরণ পড়বে। হঠাত্ ইঞ্জিন স্টার্ট হলে সেই আস্তরণ সহ জ্বালানি ইঞ্জিনে ঢুকে সমস্যা তৈরি করবে। ফলে বারবার স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়া সহ নানা সমস্যা হতে পারে।
বাস ও ট্রাক তৈরি করে এরকম একটি নামী সংস্থার পদস্থ আধিকারিক অমিত জয়সওয়াল বলেন, বাস এবং ট্রাকে এমন অনেক যন্ত্রাংশ আছে যেগুলি স্বাভাবিক চলাচল না হলে ধীরে ধীরে অকেজো হযে যায়। ব্যাটারি বা টায়ারের সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক শু, কুলিং ওয়াটারের সমস্যা হবে। যেসব বাসে এয়ারকন্ডিশনার আছে, সেগুলো অনেকদিন পর চলতে শুরু করলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। এছাড়া গ্যারাজে বা অন্য কোথাও দীর্ঘ সময ধরে পড়ে থাকার ফলে বাস বা ট্রাকের ভেতরে ও বাইরে নানা ধরনের ব্যাকটিরিয়া বাসা বাঁধতে পারে। সেক্ষেত্রে লকডাউন শেষে রাস্তায় বের করার আগে গোটা বাস বা ট্রাক জীবাণুমুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি বলে তিনি জানান।
সুবীরবাবু বলেন, এনবিএসটিসির বিভিন্ন ডিপোতে ৯৩৫টি বাস আছে। আমাদের যে কোনও সময় জরুরিকালীন পরিষেবার জন্য বাস রাস্তায় বের করতে হতে পারে। তাছাড়া লকডাউন শেষে বাস রাস্তায় নামাতেই হবে। দীর্ঘদিন না চললে বাসগুলোতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেবে। তা যাতে না হয় সেইজন্য প্রতিটি ডিপোতেই প্রতিদিন বাসগুলিকে কয়েক ঘণ্টা সময়ের জন্য স্টার্ট করে রাখা হচ্ছে। নিয়মিত মেকানিক্যাল বিভাগের কর্মীরা বাসগুলি পরীক্ষা করছেন। রাস্তায নামানোর আগে প্রতিটি বাস জীবাণুমুক্ত করার জন্য ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।