রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

পর পর কালবৈশাখীতে ব্যাপক ক্ষতি ফসলের

April 23, 2020 | 2 min read

গত শুক্রবারের কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টিতে মরে গিয়েছিল বিপুল পরিমাণ ধান। হতাশায় গোরু দিয়ে জমির নষ্ট ধান খাইয়ে দিয়েছিলেন চাষিরা। তার তিন দিনের মাথায় ফের কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টির দাপটে আরও সঙ্কটে পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলির ধান। বহু চাষিই দিশাহারা।

এ বার পূর্ব বর্ধমানে মোট বোরো ধানের চাষ হয়েছে ২১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। ১৭ এপ্রিলের ঝড়-বৃষ্টিতে ভাতার, বর্ধমান ১, খণ্ডঘোষ, বর্ধমান ২ ব্লকের ১২৪ মৌজার ২৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ধান তাতে ক্ষতির মুখে পড়ে। সোমবার রাতের কালবৈশাখী আর শিলাবৃষ্টিতে সেই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। 

মঙ্গলবার সকালে বহু চাষি মাঠে গিয়ে ধানগাছের অবস্থা দেখে ভেঙে পড়েন। ইতিমধ্যে অনেকে ধান কাটার কাজ শুরুও করেছিলেন। কিন্তু জমা জলে কেটে রাখা সেই ধান ডুবে গিয়েছে। রাজ্য কৃষি দপ্তরের নির্দেশে প্রতিটি ব্লকের কৃষি আধিকারিকরা নিজেদের এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখতে বেরিয়ে পড়েন সকালেই।

এদিনের বৃষ্টিতে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে বর্ধমান ২, রায়নার দু’টি ব্লকে। বর্ধমান-২ এর বন্ডুল ২ পঞ্চায়েতের সামন্তী গ্রাম সমেত আশপাশের বেশ কয়েকটি মৌজায় কয়েকশো হেক্টর জমির ধানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সামন্তীর বাসিন্দা চঞ্চল নন্দী বলেন, ‘৭০ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলাম। দু’দিনের ব্যবধানে পর পর শিলাবৃষ্টি আর ঝড়ে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে চাষ করেছি। এখন যা পরিস্থিতি খরচের টাকাও উঠবে কিনা বুঝতে পারছি না।’

বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে হুগলির আরামবাগ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার বোরো চাষ। হুগলি জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রের খবর, সোমবারের ঝড় আর শিলাবৃষ্টিতে আরামবাগের খানাকুল ব্লকে ক্ষতি সবচেয়ে বেশি। খানাকুলের ঘোষপুর, কিশোরপুর, পোল, অরুন্ডা, পাতুল-সহ বিভিন্ন এলাকায় শিলাবৃষ্টির জেরে ধানের শিষ ঝরে পড়েছে। ঝড়ের দাপটে পাকা ধানগাছ জলে পড়ে নষ্ট হয়েছে। কোথাও আবার, কাটার পরে জমিতে রাখা পাকা ধান ভিজে নষ্ট হয়েছে। 

সব মিলিয়ে ব্লকের অন্তত ৭০ শতাংশ বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি, খানাকুল পঞ্চায়েত সমিতির পদাধিকারিদের। ব্লকের বিডিও দেবাশিস মণ্ডল বলেন, ‘বোরো চাষের ক্ষতি হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছি। রিপোর্টও জমা দিতে বলেছি। সেই মতো ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসেব বলা যাবে৷’

হাওড়ার উলুবেড়িয়া মহকুমায় শিলাবৃষ্টি তেমন হয়নি। তবে ঝড়-বৃষ্টির জেরে কিছু এলাকায় বোরো ধানের গাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ক্ষতি হয়েছে। তবে বোরো ধান ক্ষতির মুখে পড়লেও উলুবেড়িয়া, মন্তেশ্বরের মতো এলাকার কৃষকদের দাবি, বৃষ্টিতে পাট, বাদাম এবং তিলচাষের উপকার হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে ভাঙড়-২ ব্লকের ভোগালিতে গিয়ে দেখা গেল বোরো ধান মাঠেই শুয়ে পড়েছে। একই ছবি বাদুড়িয়াতে। বৃষ্টিতে পটল, বরবটি গাছের গোড়ায় জল জমেছে। খেত থেকে জল বার করে দেওয়ার জন্য কোদাল চালাচ্ছিলেন ভোগালির কৃষকরা। ঝড়ের দাপটে টম্যাটো, বেগুন গাছ ভেঙে পড়েছে। সব মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। ভগবানপুরের সাতুলিয়ার মাঠে ভাল পেঁপে ও কলার চাষ হয়। বৃষ্টিতে অনেক পেঁপে ও কলা গাছ ভেঙে পড়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #damages crops, #hailstorm

আরো দেখুন