বর্ধিত ডিএ স্থগিত কেন্দ্রের
বেসরকারি সংস্থাগুলিকে কর্মী ছাঁটাই বা বেতন কমাতে বারণ করলেও দেশে ৫০ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী এবং ৬১ লক্ষ পেনশনারের বর্ধিত মহার্ঘভাতা বা ডিএ আগামী বছর জুলাই পর্যন্ত না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মোদী সরকার। অর্থাৎ যা ডিএ এখন মিলছে, সেটাই মিলবে। এ বছর জানুয়ারি মাসথেকে ওই বর্ধিত মহার্ঘভাতা পাওয়ার কথা ছিল।
গত মাসেই কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী ও পেনশনারদের অতিরিক্ত ৪ শতাংশ ডিএ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এর ফলে ৫০ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী এবং ৬১ লক্ষ পেনশনার গত জানুয়ারি মাস থেকে ২১ শতাংশ হারে মহার্ঘভাতা পেতেন। কিন্তু, বৃহস্পতিবারের সিদ্ধান্তের ফলে, তাঁরা এখন ১৭ শতাংশ হারে ডিএ পাবেন। জানুয়ারি থেকে ৪ শতাংশ হারে বকেয়া ডিএর কিস্তির টাকা এবং এবং এ বছর জুলাই থেকে আগামী বছর জুলাই অবধি পরের দফার কিস্তির টাকা তাঁরা পাবেন না।
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বর্ধিত মহার্ঘভাতার এই টাকা না-দিয়ে সরকারের কোষাগারে ১.২০ লক্ষ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এর থেকেই স্পষ্ট, কেন্দ্রীয় রাজকোষের কী হাল! ২০১৯-২০ অর্থবছরের এক মাস বাকি থাকতেই রাজকোষ ঘাটতির পরিমাণ ৩.৮০ শতাংশ (জিডিপির) বাজেট লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে ৫.০৭ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসে। মার্চ মাসে লকডাউনের জেরে ওই ঘাটতি যে আরও বাড়বে, তাতে সন্দেহ নেই।
বস্তুত, রাজকোষের এই করুণ অবস্থার কারণেই রাজ্য ও শিল্পমহলের ক্রমাগত দাবি সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার বড় মাপের কোনও আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে এত টালবাহানা করছে।
এ দিকে, রাজ্যগুলির আর্থিক পরিস্থিতি আরও খারাপ। সোমবারই অসমের অর্থ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা গুয়াহাটিতে সাংবাদিকদের জানান, কেন্দ্রীয় সরকার অর্থসাহায্য না-করলে মে মাসের পর থেকে রাজ্য সরকারের কর্মীদের বেতনটুকু পর্যন্ত দিতে পারবে না অসম সরকার। তিনি বলেন, জুনের মধ্যে ওই অর্থ সাহায্য অত্যন্ত জরুরি। শুধু অসমই নয়। দেশে করোনা সংক্রমণ এবং লকডাউনের জেরে শূন্য ভাঁড়ার বহু রাজ্যের। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা অর্থ সাহায্যের এসওএস পাঠাতে শুরু করেছেন। কেননা, ওই টাকা না পেলে রাজ্যগুলির পক্ষে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া বেশি দিন সম্ভব হবে না।
গত ২৪ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ৪০ দিনের লকডাউনে জমি-বাড়ি রেজিস্ট্রেশন, পেট্রল-ডিজেলে বিক্রয় কর, পণ্য-পরিষেবা বিক্রিতে জিএসটি, মদ বিক্রিতে আবগারি শুল্ক — কোনও খাতেই প্রায় কিছুই আয় হয়নি, হবেও না। অথচ, করোনা মোকাবিলায় প্রতিটি রাজ্যের স্বাস্থ্যখাতে খরচ বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে এবং সরকারি কর্মীদের বেতন, পেনশন বাবদ কিছু খরচ করতেই হবে।
পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ‘রাজস্ব আয় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের আয়ের ৭০ শতাংশই আসে জিএসটি থেকে।