কেন্দ্রীয় দলের জোড়া পত্রবাণ, পাল্টা রাজ্যের
করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসা কেন্দ্রীয় টিম ও রাজ্য প্রশাসনের সংঘাত তীব্রতর হল। রাজ্যের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে জোড়া পত্রবাণ উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের জন্য আসা দুই কেন্দ্রীয় টিমের। তার পাল্টা হিসাবে কেন্দ্রীয় টিমের বিরুদ্ধে সুর চড়াল রাজ্যের শাসকদলও।
বাংলায় সফররত কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই শনিবার সরাসরি প্রশ্ন তুলে দিয়েছে তৃণমূল। কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অভিযোগ করেছেন, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের মতো কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও বিজেপির সুরেই গলা মেলাচ্ছেন। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন সুর আরও কিছুটা চড়িয়ে টুইট করেছেন, ‘এরা কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে বাংলায় রাজনৈতিক ভাইরাস ছড়াতে এসেছে। কেন্দ্রীয় টিমের এখানে আসার পিছনে আর কোনও কারণ নেই।’ তিনি বলেন, ‘এই প্রতিনিধিদল এমন সব জায়গায় যাচ্ছে, যেখানে কোনও হটস্পট নেই। দু’-তিন সপ্তাহ আগে যেখানে কেস পাওয়া গিয়েছিল, সেই সব জায়গায় তাঁরা যাচ্ছেন।’ এই প্রতিনিধিদলকে দেশের সবচেয়ে ‘ক্যালাস টিম’ বলে অভিহিত করেছেন ডেরেক। তৃণমূলের আর এক সাংসদ এবং ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি শান্তনু সেনও এর বিরোধিতায় সরব হয়েছেন।
কলকাতায় আসা কেন্দ্রীয় দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র এদিন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে চিঠি দিয়ে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন। আবার উত্তরবঙ্গের টিমের প্রধান বিনীত যোশীও আর একটি চিঠিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে।
অপূর্ব চন্দ্র চিঠিতে লিখেছেন, ‘গত ২০ এপ্রিল আমরা কলকাতায় এসে পৌঁছনোর পর এখনও পর্যন্ত আমাদের থাকা এবং যাতায়াতের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করেনি রাজ্য সরকার। জবাব দেয়নি চারটি চিঠির।’ তাঁর আরও দাবি, কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন হাসপাতাল বা কনটেইনমেন্ট জোনে তাঁরা যখন পরিদর্শনে বেরোচ্ছেন, তাঁদের জন্য কোনও পুলিশ এসকর্ট পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না।
তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, পুলিশ এসকর্ট না-থাকলে প্রতিনিধিদলের সদস্যদের নিরাপত্তার দায়িত্ব কে নেবে? সংবাদমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে অপূর্ব চন্দ্র চিঠিতে লিখেছেন, সাংবাদিক বৈঠকে বসে মুখ্যসচিব বলেছেন, কেন্দ্রীয় টিম যেখানে ইচ্ছা ঘুরে বেড়াতে পারে। রাজ্য সরকারের কোনও সিনিয়র অফিসার তাঁদের সঙ্গে ঘুরে সময় নষ্ট করতে পারবে না। এটা বলা মানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশকে অমান্য করা। কেন্দ্রীয় দলের তরফে জানতে চাওয়া হয়েছে, যেহেতু রাজ্য সরকার তাদের কোনও পুলিশ এসকর্ট দিচ্ছে না, তাই তাঁদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার দায়িত্ব কি রাজ্য সরকার নেবে?