স্বাস্থ্য বিভাগে ফিরে যান

সংক্রমণ রোধে স্ক্রিনিং বুথের সন্ধান রুরকির

April 27, 2020 | 2 min read

করোনা লড়াইয়ে সামিল যোদ্ধারাও একের পর এক আক্রান্ত হচ্ছেন। সেই সমস্যা থেকে মুক্তির দিশা দেখালেন আইআইটি রুরকির পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক সৌমিত্র শতপথী। হাওড়ার শ্যামপুরের নাকোল গ্রামের বাসিন্দা সৌমিত্র তাঁর দলকে নিয়ে তৈরি করেছেন ‘কোভিড স্ক্রিনিং বুথ’। যা ইতিমধ্যে উত্তরাখণ্ডের রুরকি সদর হাসপাতালে বসানো হয়েছে। সৌমিত্রর দাবি, এই বুথের মাধ্যমে আক্রান্তের শরীর থেকে সোয়াব পরীক্ষা করতে গিয়ে কোনও ভাবেই করোনায় আক্রান্ত হবেন না চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী।

ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সৌমিত্র বলেন, ‘কোনও আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে উপসর্গ থাকতে পারে আবার না-ও পারে। তাই চোখে দেখে ওই ব্যক্তির থেকে নমুনা সংগ্রহ না-করে, পরীক্ষা শেষ না-করা পর্যন্ত স্পষ্ট করে বলা যাবে না, তিনি আক্রান্ত। সবরকম সুরক্ষা নিয়েও দেখা যাচ্ছে, স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। একজন ব্যক্তির থেকে নমুনা সংগ্রহ করার আগে চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীকে পিপিই, ফেস শিল্ড, গগলস, মাস্ক, গ্লাভস, জুতো, হেড কভার পরতে হচ্ছে। সব পরতে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় লেগে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী একবার এই পোশাক ব্যবহার করলে দ্বিতীয়বার তা আর ব্যবহার করা যাবে না। ভারতের মতো দেশে বৃহৎ আকারে এই কাজ করা সম্ভব নয়। খরচ বেশি।’ এই জায়গা থেকে সৌমিত্রর ভাবনায় আসে স্ক্রিনিং বুথের কথা। ঠিক একেবারে টেলিফোন বুথের ধাঁচে।
বডিটা তিন দিকে অ্যালুমিনিয়ামের শিটের তৈরি। সামনের দিকে গ্লাস। তাতে দু’টি ফাঁক থাকছে, যার মধ্যে লাগানো থাকছে গ্লাভস। বুথের ভিতরটা বায়ুচাপ যথাসম্ভব কম রাখা হচ্ছে (ভ্যাকুয়াম সিল)। স্বাস্থ্যকর্মী ভিতরে বসেই বাইরে থাকা রোগীর মুখ থেকে সোয়াব সংগ্রহ করতে পারবেন। সংগৃহীত সোয়াব বাইরে থাকা একটি পাত্রের মধ্যে রেখে দিতে পারবেন। ফলে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।

সংক্রমণ রোধে স্ক্রিনিং বুথের সন্ধান রুরকির

সৌমিত্র বলেন, ‘একজনের থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে সব মিলিয়ে বড়জোড় পাঁচ মিনিট সময় লাগবে। এখন বাড়তি সতর্কতার জন্য একজনের নমুনা সংগ্রহ করতে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় লেগে যায়। খুব সহজেই বুথটিকে স্পর্শকাতর এলাকায় বহন করে নিয়ে যাওয়া যাবে। রেহাই মিলবে পিপিই-র খরচ থেকেও।’ এই বুথ তৈরিতেও লাগছে নামমাত্র খরচ। উদাহরণ দিয়ে সৌমিত্র বলেন, ‘এর আগে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, কেরালায় এই ব্যবস্থা অবলম্বন করা হয়েছে।’

এর আগেও বিস্ফোরক খুঁজে বের করার নতুন পথের সন্ধান দিয়েছিলেন সৌমিত্র। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান পত্রিকা নেচারে তাঁর সেই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছিল। জাম থেকে বিদুৎ তৈরির কৌশলও তিনি হাতে-কলমে করে দেখিয়েছিলেন। এলাকার ছেলের এহেন উদ্ভাবনীতে উচ্ছ্বসিত শ্যামপুরের বাসিন্দারা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#covid19, #thermal screening

আরো দেখুন