স্বাস্থ্যকর্মীদের আলাদা চিকিৎসার ভাবনা রাজ্যের
করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসক-চিকিৎসাকর্মীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতালের ভাবনা রাজ্য সরকারের। মঙ্গলবার রাজ্যের আট চিকিৎসক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠকেই দাবি তোলা হয়, করোনা আক্রান্ত চিকিৎসক-চিকিৎসাকর্মীদের দ্রুত সুস্থ করে তুলতে তাঁদের আলাদা একটি হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুক সরকার।
বৈঠকের পর নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানান, ‘চিকিৎসকদের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, কোনও চিকিৎসাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হলে তাঁদের চিকিৎসার জন্য যাতে একটি আলাদা হাসপাতালের ব্যবস্থা করা যায়। আমরা ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।’
আট চিকিৎসক সংগঠনের তরফে মঙ্গলবারের এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রেজাউল করিম, হীরালাল কোনার, মানস গুমটা, পুণ্যব্রত গুণ, শান্তনু সেন, সজল বিশ্বাস, অর্জুন দাশগুপ্ত এবং শারদ্বত মুখোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব ছাড়াও উপস্থিত স্বাস্থ্যকর্তা এবং করোনা মোকাবিলায় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে গুচ্ছ দাবি তুলে ধরেন তারা।
সূত্রের খবর, অধিকাংশ দাবিকেই মুখ্যমন্ত্রী যুক্তিগ্রাহ্য বলে মনে করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। কী কী দাবি নিয়ে আলোচনা হল, দেখে নেওয়া যাক একনজরে:
পিপিই-র প্রশিক্ষণ
রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে পর্যাপ্ত পিপিই সরবরাহ করা হলেও রাজ্যের সমস্ত চিকিৎসক-চিকিৎসাকর্মী এখনও ঠিকমতো প্রশিক্ষিত নন সুরক্ষাবিধি মেনে পিপিই পরা (ডনিং) এবং খোলা (ডফিং)-এর ব্যাপারে। সম্প্রতি পিপিই পরে করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা করেও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের দুই চিকিৎসক।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে প্রকাশ করা করোনা চিকিৎসা-বিধিতেও ডনিং-ডফিংয়ের বিষয়টি উঠে এসেছে। মঙ্গলবারের বৈঠকে দাবি ওঠে, নিয়মিত পিপিই-র প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার। মুখ্যসচিব জানান, ‘চিকিৎসক-চিকিৎসাকর্মীরা যাতে সুরক্ষাবিধি মেনে পিপিই পরা এবং খোলার কাজটি করতে পারেন, সেজন্য আরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
বেসরকারি ক্লিনিক
করোনা-আবহে নিজের এবং রোগীর সুরক্ষার কথা ভেবে অধিকাংশ বেসরকারি চিকিৎসক তাঁদের ক্লিনিক বন্ধ রেখেছেন। যার ফলে বিপাকে বিপুল সংখ্যক রোগী। রবিবার করোনা আক্রান্ত অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ শিশির মণ্ডলের মৃত্যু হওয়ার পর সুরক্ষার বিষয়টি আরও গুরুতর হয়ে উঠেছে বেসরকারি চিকিৎসকদের কাছে।
মঙ্গলবার চিকিৎসক সংগঠনের প্রতিনিধিদলের তরফে বেসরকারি ক্লিনিক খোলার ব্যাপারে চিকিৎসকদের সদিচ্ছার কথা জানিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর সাহায্য চাওয়া হয়। চিকিৎসক সংগঠন ডোপার তরফে শারদ্বত মুখোপাধ্যায় জানান, ‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছি, যাতে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানে বাজারের থেকে কম দামে পিপিই কেনার সুযোগ করে দেওয়া হয় বেসরকারি চিকিৎসকদের।