করোনা: নজরবন্দিদের গতিবিধি জানতে অ্যাপ আনার কথা ভাবছে রাজ্য পুলিস
হাউস কোয়ারেন্টাইন এবং সেলফ আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তিরা আদৌ নিয়ম মেনে চলছেন কি না, তার উপর নজরদারি চালাতে অ্যাপ আনতে চাইছে রাজ্য পুলিস। এতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গতিবিধি জানতে পারবে পুলিস। আসলে বিধি ভঙ্গকারীদের বাগে আনতেই এমন পদক্ষেপ নিতে চান অফিসাররা।
পুলিস ডিরেক্টরেট ইতিমধ্যেই এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব নবান্নে পাঠিয়েছে। স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে অনুমতি মিললে তবেই এ নিয়ে এগবেন আধিকারিকরা। অবশ্য করোনা পর্ব মিটলে এই অ্যাপও নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হবে। উড়িয়ে দেওয়া হবে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের তথ্য। যাতে কারও স্বাধীনভাবে চলাফেরায় হস্তক্ষেপ না হয়।
করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা কেউ বা এই রোগ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক। একইসঙ্গে জ্বর-সর্দি বা এই ধরনের উপসর্গ থাকা ব্যক্তিকে অনেক ক্ষেত্রেই সেলফ আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে হাসপাতাল। যাতে কোনওভাবেই এই রোগ না ছড়ায়।
কিন্তু জানা যাচ্ছে, অধিকাংশ ব্যক্তিই এই নিয়ম ঠিকমতো মানছেন না বা গা-ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছেন। অনেকে রাস্তায় বেরিয়ে গল্পগুজব, দোকান-বাজার কিংবা বিভিন্ন ধরনের কাজ করছেন বলে অভিযোগ। এমনকী পরিবারের সদস্যদের থেকে নিজেকে আলাদাও রাখছেন না। যা যথেষ্ট উদ্বেগের।
এই চিন্তা থেকেই অ্যাপ চালুর কথা মাথায় আসে আধিকারিকদের। যাতে কোয়ারেন্টাইন বা সেলফ আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তিদের গতিবিধির উপর নজর রাখা যায়। কেউ নিয়ম ভাঙলে তাঁকে সতর্ক করে বিধি মনে করিয়ে দেওয়ার সুযোগও থাকবে সেক্ষেত্রে।
কীভাবে কার্যকর হবে এই অ্যাপ?
জানা যাচ্ছে, প্রতিটি থানা এলাকায় কতজন হাউস কোয়ারেন্টাইনে আছেন, সেই তালিকা তৈরি করা হবে। এই বিষয়ে হাসপাতালের সাহায্য নেওয়া হবে। এরপর সংশ্লিষ্টদের ওই অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হবে এবং তাতে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এই অ্যাপ জেলাভিত্তিক কাজ করবে। এক জেলার তথ্য অন্য জেলা জানতে পারবে না। অ্যাপে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জিপিএস অন করে রাখতে বলা হবে। যা অ্যাপের সার্ভারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। ফলে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তি নিয়ম ভেঙে বাইরে বের হচ্ছেন কি না, তা জানা যাবে।
পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময় অন্তর ভিডিও কল করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে দেখাতে হবে, তাঁর অবস্থান কোথায়। যদি কারও অ্যান্ড্রয়েড ফোন না থাকে, সেক্ষেত্রে তাঁকে কীভাবে এই নজরদারির মধ্যে আনা যাবে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।