কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

৩০শে এপ্রিল: এক পৈশাচিক গনহত্যা

April 30, 2020 | 2 min read

যে কমরেডরা আজকাল প্রায় রোজ ফ্যাসিবাদের বিরোধিতা’র ডাক দিচ্ছেন, তারা বোধহয় ভুলে গেছেন ১৯৮২ সালের ৩০শে এপ্রিল তাঁদের দল কলকাতা শহরের বুকে প্রকাশ্য দিবালোকে,জ্যান্ত পুড়িয়ে মেরেছিল ১৭ জন নিরস্ত্র আনন্দমার্গী সন্ন্যাসীদের। ভারতের বুকে এত বড় পরিকল্পিত নৃশংস গণহত্যার উদাহরণ বিরল।

এই হত্যাকান্ডে আজ পর্যন্ত একজনেরও সাজা হয়নি, বিচারবিভাগীয় কমিশন হয় কোনও রিপোর্ট দেয়নি অথবা রিপোর্ট চেপে রাখা হয়েছে।

আনন্দমার্গীদের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে নেমেছিলেন সিপিএমের নেতারা৷ মিটিং মিছিল শুরু করে আনন্দমার্গীদের ছেলেধরা প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা চলেছিল৷ ১৯৮২ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারী পিকনিক পার্কে একটি কনভেনশন ডাকা হয়৷ সেই কনভেনশনে উপস্থিত থাকা বাম নেতারা জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়েছিলেন আনন্দমার্গীদের বিরুদ্ধে৷ 

প্রথমে এলাকায় আনন্দমার্গীদের বিরুদ্ধে বারবার মিছিল করা শুরু হয়৷ পরিকল্পনা করা হয় যে, সিপিএমের ‘হার্মাদ’ বাহিনী তিন ভাগে ভাগ হয়ে তিন জায়গায় আনন্দমার্গীদের জন্যে অপেক্ষা করবে৷ বিজন সেতু, বালিগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন ও বালিগঞ্জ রেলওয়ের জিনিসপত্র রাখার জায়গায় তারা আনন্দমার্গীদের জন্যে অপেক্ষা করবে৷ যখনই আনন্দমার্গীরা তিলজলার আশ্রমের দিকে যাবে তখন তাদের খুন করা হবে৷ 

১৯৮২ সালের ৩০শে এপ্রিলের সকালে সন্ন্যাসীরা বিজন সেতুর ওপরে আসতেই সিপিএম নেতা–কর্মীদের একটি দল তাঁদের ঘিরে ফেলে লাঠি, রড দিয়ে হামলা চালায়। কার্যত চক্রব্যুহে আটকে পড়া সন্ন্যাসীরা সিপিএমের ওই উন্মত্ত দলের কাছে কাকুতি মিনতি করতে থাকেন৷ কিন্তু খুনের নেশায় বুঁদ সশস্ত্র বাহিনীর প্রথমে রড ও লাঠির ঘায়ে অচেতন করে দেয় অবধূতদের৷ 

এমন পরিস্থিতিতে অন্যান্য এলাকায় জমায়েত করে থাকা সিপিএমের ক্যাডাররাও বিজন সেতুর ওপর ভিড় বাড়িয়ে সেই নৃশংসতাকে কয়েকগুণ বাড়াতে হাত লাগান৷ এরপর অচেতন অথচ জীবিত অবধূতদের একের পর এক গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় কমরেডরা৷ 

এই যে জঘন্যতম গণহত্যা জাতি হিসাবে বাঙালির লজ্জা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Bijon Setu Massacre

আরো দেখুন