বাংলার বিজ্ঞানীদের গবেষণায় তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের মডেল
লক্ষ্য এখন একটাই, করোনা ভাইরাসজনিত রোগের প্রকোপ থেকে মানুষকে বাঁচানো। আর সেই লক্ষ্যে সার্স কোভ-২ ভাইরাসকে মারতে এবার আশার আলো দেখালেন কলকাতার জুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (জেডএসআই) এবং গুজরাতের ফরেনসিক সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। বাংলা এবং গুজরাতের বিজ্ঞানীদের মিলিত প্রয়াসে করোনাকে মারতে তৈরি হয়েছে এক নতুন ভ্যাকসিনের মডেল।
পরীক্ষাগারে বিভিন্ন প্রয়োগক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন সফলভাবে কাজ করেছে। সেই সঙ্গে মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দিতেও সক্ষম হয়েছে এই ভ্যাকসিন মডেল। জেডএসআইয়ের সেন্টার ফর ডিএনএ ট্যাক্সোনমি এবং সেন্টার ফর ফরেনসিক সায়েন্সের বিজ্ঞানী মুকেশ ঠাকুর জানিয়েছেন, ‘ওষুধ তৈরি করে তা মানুষ বা অন্য কোনও প্রাণীর উপর পরীক্ষা করার ক্ষমতা আমাদের নেই।
তবে এই মডেল পরীক্ষাগারে সম্পূর্ণ সফল। আমাদের এই গবেষণা সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিতও হয়েছে।’ তাই তিনি আশাবাদী, কোনও না কোনও সংস্থা তাঁদের মডেলকে অনুসরণ করে ভ্যাকসিন তৈরি করার বিষয়ে আগ্রহ দেখাবে।
বিজ্ঞানীরা এই গবেষণায়, মূলত সার্স কোভ-২ ভাইরাসে থাকা প্রোটিন কাঠামোর বিশ্লষণের মাধ্যমে নিজেদের কাজ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। তাতেই দেখা গিয়েছে একটি নির্দিষ্ট অ্যান্টিজেনের গায়ে ‘এপিটোপস’ জাতীয় কিছু বস্তু রয়েছে। যা মূলত ভাইরাসের মধ্যে থাকা প্রোটিন দিয়েই তৈরি হয়। ভাইরাস যখন আমাদের শরীরে ঢোকে, তখন তা অ্যান্টিবডির সঙ্গে মিশতে চেষ্টা করে। এইভাবেই ভাইরাস আমাদের শরীরের অ্যান্টিবডির ক্রিয়া কমিয়ে দেয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নষ্ট করে আমাদের শরীরে হামলা চালায়।
সেরে ওঠা রোগীদের প্লাজমা ব্যবহার করেই সফল চিকিৎসার সম্ভাবনা দেখছেন ডাক্তাররা। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে কোনও সময় শরীরে ফের করোনার আক্রমণ ঘটলে এই অ্যান্টিবডি তা প্রতিরোধ করবে। বাড়িয়ে দেবে শরীরের সার্বিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও।
ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক জার্নালে বিষয়টি প্রকাশ হয়েছে। তবে এবিষয়ে আরও গবেষণা চলছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চকেও (আইসিএমআর) এবিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। কোনও সংস্থা আগ্রহ দেখালে অবশ্যই ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু করা যেতে পারে।