আক্রান্ত সত্যিই ‘কম’, না ধরা পড়ছে কম?
দেশে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা সাত লাখ পেরোল মঙ্গলবার। সবমিলিয়ে আক্রান্ত ৩০ হাজার ছুঁইছুঁই। প্রায় সমসংখ্যক পরীক্ষায় ব্রিটেনে আক্রান্ত দেড় লাখের বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে ভারতের তুলনায় ৩৩ গুণ বেশি করোনা পরীক্ষা করেছে আমেরিকা। সেখানে দশ হাজার পরীক্ষা পিছু পজিটিভ ১৭৫০ জন। ভারতে সংখ্যাটা চারশোর সামান্য বেশি। স্পেন, ইতালি, ইরান, জার্মানি, ফ্রান্স, কানাডার মতো বহু দেশের তুলনাতেই পরীক্ষার সঙ্গে আনুপাতিক হারে পজিটিভের সংখ্যা কম ভারতে। অর্থাৎ, গত কয়েকদিনে দেশে পরীক্ষা বাড়লেও, সমহারে বাড়েনি আক্রান্তের সংখ্যা।
এখানেই উঠে আসছে জরুরি প্রশ্ন। ভারতের আক্রান্ত সত্যিই ‘কম’, নাকি ধরা পড়ছে কম? কম সংক্রমণের এই হার স্বস্তিদায়ক নাকি লকডাউনে ছাড় দিলেই অন্য দেশগুলির মতো চড়চড় করে বাড়বে আক্রান্তের রেখচিত্র? দেখা যাচ্ছে, এই দেশগুলির সব ক’টিতেই জানুয়ারির শেষ দিকে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে।
১৫ মার্চ ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা একশো পেরোয়। যা ব্রিটেনে হয়েছে ৫ মার্চ নাগাদ, আমেরিকায় মার্চের একেবারে শুরুতে। ২৯ ফেব্রুয়ারি স্পেনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৩, ফ্রান্সে ৫৭। অথচ, এই দেশগুলিতে অনেক আগেই মহামারীর আকার নিয়েছে কোভিড-১৯। চলছে মৃত্যুমিছিল। ভারতে মৃতের সংখ্যা হাজার ছুঁইছুঁই। কিন্তু অন্যদের পাশে সংখ্যাটা সামান্যই। ঘটনাচক্রে এই দেশগুলিতে জনঘনত্ব ভারতের তুলনায় অনেক কম।
তা হলে কোন জাদুতে ভারতে সংক্রমণের হার তুলনায় এতটা কম?
চটজলদি লকডাউনে সংক্রমণ বৃদ্ধির হারে অনেকটাই লাগাম পরানো গিয়েছে, তা একবাক্যে মানছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সেটাই একমাত্র নয়। নানা কারণে প্রকৃত চিত্র সামনে আসছে না বলেই অভিমত অনেকের। তাঁদের মতে, লকডাউন ঘোষণা করে সংক্রমণের সর্বোচ্চ পর্যায়ে (পিক) পৌঁছনো পিছিয়ে দিতে পেরেছে ভারত, সাফল্য বলতে এটুকুই।
বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট, আইসিএমআরের প্রাক্তন এমেরিটাস মেডিক্যাল সায়েন্টিস্ট টি জেকব জনের অভিযোগ, ‘অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা টানলে চলবে না। ভারতের কৌশলে গলদ রয়েছে। ভুল লোকের পরীক্ষা করা হচ্ছে।’