লকডাউন: স্মার্টফোন বিক্রি কমতে পারে ১৯০০ কোটি টাকা
করোনা সংক্রমণের জেরে ভারতে স্মার্টফোন বিক্রির ব্যবসা প্রায় ১৯০০ কোটি টাকা কমতে পারে বলে জানিয়েছে কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ। তাদের বক্তব্য, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের থাবায় গত বছরের মার্চের তুলনায় ২০২০-র মার্চে বাজারে স্মার্টফোন সরবরাহ বিপুল পরিমাণে (১৯%) কমেছে এবং এই ধারা এপ্রিলেও বজায় থাকবে।
চলতি বছরের জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতে একাধিক নতুন মডেলের ফোনের লঞ্চ এবং প্রোমোশন জারি থাকার দরুণ বাজার তেজিই ছিল। কিন্তু মার্চে বাজার ‘বসে’ যাওয়ায় সার্বিক ভাবে জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে ২০১৯ সালের তুলনায় ৪% বেড়েছে ভারতের স্মার্টফোন বাজার।
সংস্থার বিশেষজ্ঞদের মত, এই বাজার জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকের আগে ঘুরে দাঁড়ানোর তেমন কোনও সম্ভাবনা দেখছেন না তাঁরা। উৎসবের মরসুমে অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকের বিক্রির উপরেই আশা রাখছেন তাঁরা। সব মিলিয়ে ২০২০ ক্যালেন্ডার বর্ষে স্মার্টফোন সরবরাহ ১০% কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গত বছর ভারতের বাজারে মোট ১৫ কোটি ৮০ লক্ষ ইউনিট স্মার্টফোন সরবরাহ হয়েছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে চলতি বছরে যা কমে ১৪ কোটি ২০ লক্ষ ইউনিটে দাঁড়াতে পারে বলে জানিয়েছে গবেষণা সংস্থাটি।
লকডাউনের মেয়াদ আরও সম্প্রসারিত হলে ব্যবসার ক্ষতি যেমন বাড়বে তেমনই তার নেতিবাচক প্রভাব সম্পূর্ণ সরবরাহ ব্যবস্থা, আয়, পেমেন্ট- সমস্ত কিছুর উপর পড়বে। পাশাপাশি, লকডাউন দীর্ঘস্থায়ী হলে অর্থনীতির গতি রুদ্ধ এমনকী সঙ্কুচিতও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই জরুরি নয় এমন পণ্য কেনাকাটা বাদ দিয়ে সঞ্চয়কে অগ্রাধিকার দেবে। আর তা হলে স্মার্টফোনের বিক্রি কমবে বলে মত পাঠকের।
স্মার্টফোনের অনলাইন বিক্রি বিরাট মার খেয়েছে। কারণ, লকডাউনের মধ্যে ই-কমার্স সংস্থাগুলিকে শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহ করার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। স্মার্টফোন অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের তালিকায় পড়ে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরে অনলাইনে স্মার্টফোন বিক্রি বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে স্মার্টফোন উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রভাব অন্তত ২০ দিনের হবে। যে সমস্ত সংস্থা ভারতে উৎপাদন করে রপ্তানি করে তাদের ক্ষেত্রে প্রভাব আরও বেশি দিনের হতে পারে বলে জানিয়েছে কাউন্টারপয়েন্ট। স্বস্তির কথা একটাই যে কর্মী ছাঁটাইয়ের তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। কাউন্টারপয়েন্টের যুক্তি, যেহেতু পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেকে উৎপাদন বাড়াতে চাইবে, তাই কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে সংস্থাগুলি হাঁটবে না।