লকডাউন শেষ হলে ঠিকা শ্রমিক চাহিদা বাড়বে দেশে
লকডাউনে যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করতে আগামী মাসগুলিতে উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে টাটা স্টিল, কেইসি ইন্টারন্যাশনাল, লার্সেন অ্যান্ড ট্যুব্রো, মহিন্দ্রা অ্যান্ড মহিন্দ্রা এবং মারুতি সুজুকি সমেত দেশের বহু সংস্থা। এর ফলে লকডাউন উঠে গেলে ঠিকা বা চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত শ্রমিকের চাহিদা বাড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
টাটা স্টিল, মহিন্দ্রা অ্যান্ড মহিন্দ্রা, লার্সেন অ্যান্ড ট্যুব্রোর মতো সংস্থাগুলি কারখানার কর্মীদের লকডাউনের মধ্যেও ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। লকডাউন উঠে যাওয়ার পর যাতে জোরকদমে উৎপাদন শুরু করা যায় সে কথা মাথায় রেখেই ঠিকা কর্মীদের কারখানাতেই বসবাসের বন্দোবস্ত করেছে এই সংস্থাগুলি। তবে, বেশ কিছু সংস্থা লকডাউনের মধ্যে পরিযায়ী কর্মী ধরে রাখতে না পারায় সেই স্থান পূরণের জন্য তাদের নতুন কর্মী নিয়োগ করার প্রয়োজন হতে পারে।
দেশের অন্যতম অগ্রণী পাওয়ার ট্রান্সমিশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ক্রয় এবং নির্মাণ সংস্থা কেইসি ইন্টারন্যাশনাল লকডাউন শিথিল হওয়ার পর আরও বেশী করে ঠিকা কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করছে। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও বিমল কেজরিওয়াল বলেন, ‘প্রকল্প নির্মাণে অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সময়ের মধ্যে তা শেষ করতে গেলে আমাদের আরও লোকের প্রয়োজন।’ সে কারণে নতুন কর্মী নিয়োগ করতে হবে।
আরপিজি গোষ্ঠীর এই সংস্থায় বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার কর্মী কাজ করেন। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ এবং বিহারের প্রত্যন্ত এলাকা সমেত দেশের বিভিন্ন অংশে প্রায় ১৫০টি স্থানে প্রকল্পের কাজ চলছে সংস্থাটির।
মহিন্দ্রা অ্যান্ড মহিন্দ্রার চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার রাজেশ্বর ত্রিপাঠি বলেন, ‘আমাদের কারখানাগুলিতে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হলে ঠিকাকর্মীদের ফেরত পেতে হবে। এদের মধ্যে অনেকে আবার নিজেদের বাড়িতে ফিরে গিয়েছে। সেই সমস্ত কর্মীদের আবার ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।’
কিন্তু, বিশেষজ্ঞদের মতে, লকডাউনের কারণে পরিযায়ী কর্মীদের যে কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছে তারপর তাঁদের দ্রুত ফিরিয়ে আনা সংস্থাগুলির পক্ষে কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং হবে। টিমলিজ সার্ভিসেসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ঋতুপর্ণা চক্রবর্তীর কথায়, ‘উৎপাদন সংস্থাগুলিকে আগের তুলনায় ২০-৩০ শতাংশ কম ঠিকা বা চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়ে কাজ করতে হবে। এর কারণ, যে সমস্ত কর্মী লকডাউনের জন্য বহু দূরে নিজের বাড়িতে ফিরে গিয়েছে, তাঁরা খুব সহজে আর ফেরত আসবেন না।’
কাজেই, সংস্থাগুলিকে সেই শূন্যস্থান পূরণের উপর আগে জোর দিতে হবে, তারপর অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগের বিষয়টি আসবে। শুধু তাই নয়, এর জন্য বেতন বাড়াতে হতেও পারে সংস্থাগুলিকে, তিনি জানান।
আইটিসির এক মুখপাত্রের কথায়, ‘আমরা পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিকল্পনা করে রাখছি। লকডাউন উঠে গেলেই উৎপাদন বাড়ানো, নতুন খাতে কর্মীদের কাজে লাগানো এবং বণ্টন ব্যবস্থা পুনর্বিন্যাসের কাজ শুরু হবে।’