দু’মাসে সংবাদপত্র শিল্পে লোকসান ৪৫০০ কোটি টাকা
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং তার পরে লকডাউনের জেরে গত দু’মাসে ভারতীয় সংবাদপত্র শিল্পে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়েছে বলে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারকে জানাল ইন্ডিয়ান নিউজপেপার সোসাইটি (আইএনএস)। দেশের সংবাদপত্র-শিল্পের শীর্ষ সংগঠনটির বক্তব্য, ‘অর্থনৈতিক কার্যকলাপ প্রায় ভেঙে পড়েছে। কোনও বিজ্ঞাপন নেই। আগামী ছ’-সাত মাস এই লোকসান চলবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে (অর্থাৎ, আরও ১২-১৫ হাজার কোটি টাকা লোকসানের সম্ভাবনা), যদি না সরকার খুব দ্রুত কোনও প্যাকেজের ব্যবস্থা করে।
সংগঠনের দাবি, এই কঠিন পরিস্থিতিতে নিউজপ্রিন্টের উপরে পাঁচ শতাংশ আমদানি শুল্কের পুরোটাই ছাড় দেওয়া হোক। রুগ্ণ হয়ে পড়ার হাত থেকে সংবাদপত্রকে বাঁচাতে দু’বছরের জন্য করছাড়ও জরুরি বলে মনে করে আইএনএস। সংবাদপত্র শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে ৩০ লক্ষের বেশি মানুষ যুক্ত। গত বাজেটে নিউজপ্রিন্টের উপরে ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়, যা এই বাজেটে অর্ধেক করা হয়েছে। কিন্তু তার আগে নিউজপ্রিন্টে কোনও শুল্ক ছিল না। সংবাদপত্র ছাপার খরচের একটি বড় অংশই নিউজপ্রিন্টের জন্য বরাদ্দ করতে হয়।
অন্য সব শিল্পে যে ছাড় এবং সুবিধে দেওয়া হয়েছে, সে সবও সংবাদপত্র শিল্পের ক্ষেত্রে দেওয়া উচিত বলে দাবি আইএনএসের। এ ছাড়া সরকারি বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ এবং প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য বাজেটে ২০০ শতাংশ অর্থবৃদ্ধির দাবি করা হয়েছে। যে সব সরকারি বিজ্ঞাপন বকেয়া রয়েছে, সেগুলি যাতে দ্রুত ছেড়ে দেওয়া হয়, তার জন্য আবেদন করেছে আইএনএস। বিজ্ঞাপনবাবদ যে টাকা বকেয়া রয়েছে, তা-ও দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সংগঠনের তরফে।
কেন্দ্রকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ত্রিবিধ বিপদের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে সংবাদপত্রকে— ভাইরাস, বিজ্ঞাপনের খরা এবং নিউজপ্রিন্টের উপরে শুল্ক। এর ফলে এই পরিস্থিতিতে অনেক মাঝারি এবং ছোট কাগজ তাদের প্রকাশনা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। বাকিরা নজিরবিহীন ভাবে পাতার সংখ্যা কমিয়ে এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
আইএনএসের আর একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘দেশে সংবাদমাধ্যমের কার্যকারিতায় জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই মহামারীতে আমাদের দেশের সংবাদপত্রগুলি তাদের ক্ষমতার ঊর্ধ্বে গিয়ে কাজ করে চলেছে। প্রতিটি বিভাগের কর্মীরা তাঁদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিশ্চিত করছেন যাতে পাঠকরা জীবনরক্ষাকারী এবং অন্য গুরুত্বপূর্ণ খবর পান সুরক্ষিত ভাবে ঘরে বসেই।’