মে দিবসে শ্রমিকের হাতে সবজি
লকডাউনে এক মাসেরও উপর বন্ধ কল-কারখানা। আসানসোলের কন্যাপুর শিল্পতালুক, রানিগঞ্জের মঙ্গলপুর শিল্পতালুক, জামুড়িয়া, কুলটি, সালানপুর ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল হাবে বন্ধ স্পঞ্জ আয়রন, লৌহ-ইস্পাত, সিমেন্ট, বিস্কুট, সাবান সমেত একাধিক কারখানা৷ সব মিলিয়ে এই সব কল-কারখানায় প্রায় ৫০ হাজারের মতো লোক কাজ করেন। তাঁদের কেউ স্থায়ী কেউ ঠিকা শ্রমিক।
মার্চের ২৩ তারিখ লকডাউন ঘোষণার পর বহু কারখানার কর্মীরা বেতন পাননি। কিছু সংস্থায় কয়েকদিনের বেতন হয়েছে। মে মাসের বেতন আদৌ মিলবে কিনা, তা নিয়ে রয়েছে ঘোর অনিশ্চয়তা।
ফলে আজ ঐতিহাসিক মে দিবসে বহু শ্রমিকই অস্তিত্ব, কাজ হারিয়ে পেশা পাল্টেছেন। বিক্রি করছেন সব্জি। রানিগঞ্জের একটি কারখানার কর্মী দিনেশ ভুঁইয়া কিংবা কুলটির অঙ্কুশ মল্লিক অথবা জামুড়িয়ার রমেন দাসের কথাই ধরা যাক। বাড়ির লোকেদের মুখে একমুঠো খাবার তুলে দিতে এই শ্রমিকদের এখন তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা রাজনৈতিক দলের দিকে। এই তিন জনই গত কয়েকদিন ধরে সামান্য সব্জি নিয়ে বড় রাস্তার ধারে বসে পড়েছেন। বলছেন, অন্তত সামান্য অর্থে কিছুটা তো চাল-ডাল কেনা যাবে।
শিল্পতালুক সমেত জামুড়িয়ার মোট ২২টি কারখানায় প্রায় ২৩ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। এছাড়া রানিগঞ্জের ১২টি কারখানায় ৮ হাজার, আসানসোলের ৮টি কারখানায় ৬ হাজার ও সালানপুরের ৮টি কারখানার ৬ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। মহকুমার এমন কিছু বিস্কুট, গাড়ির যন্ত্রপাতি নির্মাণ সংস্থা রয়েছে যেখানে ১০-১৫ জন থেকে শুরু করে ৫০ জন পর্যন্ত কর্মী কাজ করেন। সব কারখানা মিলিয়ে অন্তত ৫০ হাজারের মতো কর্মী রয়েছেন আসানসোল মহকুমায়।
ইতিমধ্যে জামুড়িয়া স্পঞ্জ আয়রন কারখানা এবং সালানপুর-কল্যাণেশ্বরী এলাকায় তিনটি কারখানায় শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।
বেতন সমস্যা নিয়ে নিজেদের সাফাই দিয়েছেন কারখানার মালিকেরা। তাঁদের কথায়, সংস্থাগুলোর আর্থিক ক্ষতির কথাও ভাবতে হবে। কারখানা বন্ধ। যে সব জিনিস উৎপাদন করা হয়েছে, সেগুলো সরবরাহ করা যায়নি। টাকা আসেনি। উৎপাদিত মাল সরবরাহের জন্য জেলাশাসকের কাছে লিখিত ভাবে আবেদন করেছেন কারখানা মালিকরা। জেলাশাসক সেই আশ্বাস দিয়েছেন।