শ্রমিক ফেরাতে ট্রেন দিক কেন্দ্র, দাবি বহু রাজ্যের
বিহার, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, অসমের মতো রাজ্য থেকে লাখ লাখ পরিযায়ী শ্রমিক দক্ষিণের রাজ্য এবং দূরবর্তী রাজ্যগুলিতে কাজ করতে যান। সামাজিক দূরত্ব মেনে তাঁদের বাসে করে নিজেদের রাজ্যে ফেরাতে সময় ও খরচ লাগবে বিপুল, তাই পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করুক কেন্দ্র— ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবার সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে এমন দাবিই জানাল পাঞ্জাব, বিহার, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র ও দক্ষিণের একাধিক রাজ্য। সূত্রের খবর, কেন্দ্র বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
একদিন আগেই কেন্দ্র জানিয়েছে, নানা রাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে, কোনও করোনা-উপসর্গ না-থাকলে তাঁদের বাসে করে নিজ রাজ্যে ফেরানোর ব্যবস্থা করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার। এ দিনের বৈঠকে বিহারই প্রথম আপত্তি তোলে বলে খবর। বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদী টুইটও করেন, কেন্দ্রের উচিত পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা। এই আর্জির বড় কারণ, পরিযায়ী শ্রমিকদের বিপুল সংখ্যা! রাজস্থান এ দিনই ২৬,০০০ পরিযায়ী শ্রমিককে তাদের রাজ্য থেকে মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট ও অন্যান্য রাজ্যে পাঠিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট জানিয়েছেন, ৬ লক্ষেরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক তাঁর রাজ্যে আটকে।
কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে, এত দীর্ঘ পথ বাসে পাঠানো সম্ভব নয়, সে কথা স্পষ্ট করে দিয়েছে গেহলটের রাজ্যও। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছেন গেহলট। একই দাবি মহারাষ্ট্রেরও। করোনা সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি মহারাষ্ট্রে, আর সেখানেই সবচেয়ে বেশি পরিযায়ী শ্রমিক কর্মরত। তামিলনাড়ু জানিয়েছে, তাদের রাজ্যে ৪ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের অধিকাংশই বিহার ও বাংলার। তাঁদের ফেরাতে যতগুলো রাজ্য অতিক্রম করতে হবে, তা বাসে অসম্ভব। রাজ্যগুলির যুক্তি, বিশেষ ট্রেনটির মাঝপথে থামার প্রয়োজন নেই। সূত্রের খবর, সরকারের শীর্ষ স্তর থেকে নির্দেশ এলে যাতে পর্যাপ্ত ট্রেন জোগানো যায়, তা নিয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করেছে রেল মন্ত্রকও।
তবে, প্রশ্ন উঠছে কেন্দ্রের আরও একটি নির্দেশ নিয়ে। এত লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের করোনা-পরীক্ষা করা সম্ভব নয়, জানিয়ে দিয়েছে সব রাজ্য। ফলে, ভরসা স্ক্রিনিং। সেক্ষেত্রে উপসর্গহীন আক্রান্ত স্ক্রিনিংয়ে ধরা নাও পড়তে পারেন। ফলে, সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছে। উত্তরপ্রদেশ অবশ্য জানিয়েছে, ১০ লক্ষ শ্রমিকের জন্য তাদের কোয়ারান্টিন সেন্টার তৈরি। কিন্তু ভিনরাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকের জন্য সব রাজ্য এই ব্যবস্থা করতে পারবে কি না, উঠছে প্রশ্ন। অনেক রাজ্য শ্রমিকদের ফেরানোর ব্যাপারে অনীহাও প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, লকডাউন উঠলে শিল্প-কারখানা ধীরে ধীরে খুলবে। ফলে শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানো অর্থহীন।