জোনে জোনে তফাৎ কোথায়?
করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনুযায়ী গত ১৫ এপ্রিলই জেলাগুলিকে মোট তিনটি জোনে ভাগ করে দেয় কেন্দ্র। করোনা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা যাতে সহজ হয়, তা মাথায় রেখেই রেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন জোনে ভাগ করা হয়েছে। এই রেড, গ্রিন ও অরেঞ্জ জোনের মধ্যে ফারক কোথায়, তা অনেকেরই জানা নেই।
রেড জোন: যেসব জেলাগুলিতে করোনা আক্রান্তের হার অত্যন্ত বেশী, অর্থাত্ ‘হটস্পট’ বা কন্টেনমেন্ট এলাকা যেখানে বেশী, সেই জেলাগুলিকেই রেড জোনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বোঝাতেই রেড জোন হিসেব চিহ্নিত করা হয়েছে। এই রেড জোনগুলির ক্ষেত্রে অত্যন্ত কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয় প্রশাসনকে। সামান্য গাফিলতির ফল ভয়ঙ্কর হতে পারে। তাই বিশেষ নজরদারি চালিয়ে কড়া হাতে লকডাউন করতে হয়।
অরেঞ্জ জোন: সংক্রমণ আছে কিন্তু তার হার রেড জোনের তুলনায় অনেক কম, হটস্পট নয়, এমন জেলাগুলিকে অরেঞ্জ জোনের মধ্যে ফেলা হয়েছে। রেড জোনে সংক্রমণ কমে এলে, তা অরেঞ্জ জোনে চলে আসে। আবার গ্রিন জোনে সংক্রমণ দেখা দিলে, তা অরেঞ্জ জোনে ঢুকে পড়ে। অর্থাত্ এটা মধ্যবর্তী জোন।
গ্রিন জোন: সংক্রমণ-মুক্ত বা করোনা ফ্রি জেলাগুলিকে গ্রিন জোনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে । এই জোনে করোনা সে ভাবে প্রভাব বিস্তার করেনি। ১৪ দিনের মধ্যে কোনও জেলায় নতুন করে করোনা আক্রান্তের সন্ধান না মিললে, ধরে নেওয়া হয় সেই জেলা করোনামুক্ত। অর্থাত্ গ্রিন জোন তুলনামূলক স্বস্তির জেলা। তবে, বিপন্মুক্ত বা ঝুঁকিমুক্ত কখনোই নয়। সামান্য গাফিলতিও গ্রিনকে অরেঞ্জ জোনে ঠেলে দিতে পারে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন জানিয়েছিলেন, দেশের ৮০ জেলা থেকে বিগত ৭ দিনে করোনা আক্রান্তের খবর নেই। এর মধ্যে আবার ৪৭ জেলায় বিগত ১৪ দিনে একটিও করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়নি। অর্থাত্ ওই ৪৭ জেলা গ্রিন জোন।
রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী করোনা সংক্রমণের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গে রেড জোনে রয়েছে চারটি জেলা। সেগুলি হল কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা ও পুর্ব মেদিনীপুর। অরেঞ্জ জোনে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, নদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব-পশ্চিম বর্ধমান, মালদা, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও কালিম্পং। এ ছাড়া বাকি জেলাগুলি গ্রিন জোনের অন্তর্ভুক্ত।
কলকাতায় মোট ২২৭টি জায়গাকে সংক্রমক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যসচিব জানান, মহানগরের ২২৭টি এলাকার মধ্যে ১৮টিতে গত দু’সপ্তাহে নতুন করে কেউ সংক্রামিত হননি। উত্তর ২৪ পরগনার মোট ৫৭টি এলাকাকে কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। হাওড়ায় মোট ৫৬টি সংক্রমিত এলাকাকে বিশেষ নজরে রাখা হচ্ছে। আর পূর্ব মেদিনীপুরের তালিকায় রয়েছে মোট আটটি ব্লক।