লকডাউনে এক হার না মানা লড়াই
পরিচারিকাদের কাজ কেড়ে নিয়েছে করোনা। কোনও সুপারিশ না থাকায় নাম ওঠেনি বিপিএল তালিকাতেও। মেলেনি কোনও কেন্দ্রীয় সাহায্যও। এই দিন আনি দিন খাই অবস্থায় বিশেষ ভাবে সক্ষম ভাই বোনের দায়িত্ব সামলে করোনা জয়ের স্বপ্ন দেখছেন শিলিগুড়ির নীলা সরকার। পরিচারিকার কাজ ফিরবে আবার, ভাইটাও ভিক্ষা করতে পারবে।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের এতো প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও কেন এত কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে এই পরিবারকে? রায়গঞ্জের বিডিও এন সি শেরপা এই বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
স্বামী ছেড়ে চলে গেছেন বহু বছর আগে। দুই ভাইবোন জন্মগত দৃষ্টিহীন। পরে আরও এক ভাই দৃষ্টিহীন হয়ে পড়ে। এক কাঁধেই সবার দায়িত্ব। কারও দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলেননি শিলিগুড়ি পুরনিগমের শান্তিনগরের বাসিন্দা নীলা দেবী।
দারিদ্র্যের গ্লানি সহজেই ঢাকা পড়ে যায় মুখের হাসিতে। বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে আসার জন্যে গিয়েছিলেন অনেকের কাছে। বিপিএল কার্ড না থাকায় তা হয়নি। আজও তাদের অন্ধকারে রাত কাটাতে হয়, পাননি উজ্জ্বলা প্রকল্পের গ্যাসও। জ্বালানি সংগ্রহ করতে হয় কাজে বেরনোর আগে। কিন্তু হাতে এখন অঢেল সময়। করোনার প্রভাবে কাজে যাওয়াও বাদ পড়েছে। কাজের বাড়ি টাকা দেবে বলে আশ্বস্ত করেছে।
সংসার চালানোর পুঁজি মাসে ঐ এক হাজার টাকাই। তাতেই চালাতে হবে চারটি পেট। বড়ভাই একসময় সাইনবোর্ড লিখতেন। সংসারে তাতে অনেকটাই সাহায্য হতো। কিন্তু হঠাৎই তার দৃষ্টি চলে যায়। অবস্থা না থাকায় চিকিৎসাও হয়নি। কথা বলা প্রায় ভুলেই গেছে এই তিনজন। ঠিক ঠাক শুনতেও পায় না।কিন্তু নীলা দেবী তাদের ছেড়ে চলে যাননি। আর কখনো যাবেনও না।