বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

সামনের দু’মাসে কি শিখরে সংক্রমণ 

May 8, 2020 | 2 min read

দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যেদিন ৫০ হাজারের গণ্ডি পেরোল সেদিনই আশঙ্কার বার্তা শোনালেন নয়া দিল্লির এইমসের অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া। জানিয়ে দিলেন, জুন এবং জুলাই এই দু’টি মাসে দেশে করোনা সংক্রমণ শিখরে পৌঁছতে পারে! পরে অবশ্য সুর কিছুটা বদলে জানান, সম্মিলিতভাবে  স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে হয়তো সংক্রমণ শিখরে নাও পৌঁছতে পারে!

দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩,৫৬১ জন সংক্রামিত হওয়ায় দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫২,৯৫২। এক দিনে ৮৯ জনের মৃত্যুতে মোট মৃতের সংখ্যা ১,৭৮৩। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যতম পরামর্শদাতা রণদীপ গুলেরিয়ার বক্তব্য ছিল, ‘যে ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তার ভিত্তিতে বলা যায়, জুন ও জুলাই মাসে দেশে করোনা সংক্রমণ শিখরে (পিক) পৌঁছবে। আমাদের দেশে এখন প্রতিদিনই করোনার স্যাম্পেল পরীক্ষা। পাল্লা দিয়েই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা এটা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের। আর তাই আমাদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে।’

বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ কে কে আগরওয়ালও বলেন, “জুন এবং জুলাই মাস বর্ষার সময়। বর্ষা মানেই বাড়বে আর্দ্যতা। সেই সঙ্গেই বাড়তে পারে করোনার প্রকোপ। করোনা সংক্রমণ সারা দেশে একসঙ্গে শিখরে নাও পৌঁছতে পারে। যেখানে আর্দ্যতা বেশি, সেখানে করোনার প্রকোপ তত বেশি হতে পারে। যে রাজ্য গুলিতে বেশি বৃষ্টি হয়, সেখানে বাড়তি সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে।’ কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল ক’দিন আগেই বলেছেন,

সামনের দু’মাসে কি শিখরে সংক্রমণ

সকলে মিলে সামাজিক স্বাস্থ্য বিধি মেনে চললে করোনা সংক্রমণ শিখরে নাও পৌঁছতে পারে। গুলেরিয়া কি তবে সেই বক্তব্যকে খারিজ করছেন? এই প্রশ্নের মুখে গুলেরিয়া কিছুটা সুর বদলে বলেন, “করোনা আক্রান্ত বাড়ছে, তবে ডাবলিং রেট কম। আগামী দিনে করোনা সংক্রমণ শিখরে ওঠার সম্ভাবনা থাকলেও আমরা সকলে যদি সতর্ক থাকি, সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করি, তবে এমন হতেই পারে– দেশে করোনা শিখরে পৌঁছল না।” বিশিষ্ট চিকিৎসকদের এই বক্তব্য নিয়ে অবশ্য সন্দেহের অবকাশও থাকছে। কারণ, আক্রান্ত বা সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাব্য হার সম্পর্কে ম্যাথামেটিক্যাল বায়োলজির কোনও বিশেষজ্ঞ বা ভাইরোলজিস্ট সঠিক পূর্বাভাস পারেন। এই দুই চিকিৎসকের অনুমান কতটা ভরসাযোগ্য, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

তবে কেন্দ্র কোনওরকম গা ছাড়া মনোভাব দেখাতে নারাজ। এ দিনও দেশের পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা ও উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, এই তিনটি রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি দেখে আরও বেশি টেস্টের উপর জোর দিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী। জোর দেওয়া হয়েছে করোনা রোগীর কষ্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের উপরও। স্বাস্থ্য মন্ত্রীর বক্তব্য ‘সারি’(সিরিয়াস অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস) এবং “আইএলআই” (ইনফ্লুয়েঞ্জা লাইক ইলনেস) রোগীদের খুঁজে বের করতে হবে, যত দ্রুত সম্ভব। প্রতিটি জেলায় অন্তত এমন ২৫০ জনকে খুঁজে তাদের করোনা পরীক্ষা করতে হবে। উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তদের খুঁজে বের করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি বাড়াতে হবে। যে সব পরিযায়ী শ্রমিক ভিনরাজ্য থেকে এই তিনটি রাজ্যে ফিরেছেন, তাঁদের উপরও কড়া নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী।

এ দিকে, কেন্দ্রের শীর্ষ স্তরের নির্দেশে এ দিনই মুম্বই গিয়ে পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ দল। সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল নিজেই এই দলে রয়েছেন। এই মুহূর্তে সব থেকে খারাপ পরিস্থিতি মহারাষ্ট্রের। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬,৭৫৪ আর মৃত্যু হয়েছে ৬৫১ জনের। শুধু ধরাভি বস্তিতেই নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ জন। সংক্রমণে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে, সেই রণকৌশল তৈরির জন্যই কেন্দ্রীয় দলের এই মুম্বই সফর।

পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও আয়ুষ মন্ত্রকের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হয়েছে অশ্বগন্ধা, যষ্ঠীমধু, আয়ুষ ৬৪-র ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#patient, #covid19, #june-july

আরো দেখুন