লাইসেন্স ফি কমানোর দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ বার-রেস্তোরাঁ মালিকরা
প্রমাদ গুনছেন রেস্তোরাঁ এবং বার কর্তৃপক্ষ। একে ব্যবসা বন্ধ থাকায় আয় শিকেয়, তার উপরে ৩০ জুনের মধ্যে বার মালিকদের এক্সাইজ লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ বাবদ ফি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ রাজ্যে বারের বার্ষিক লাইসেন্স ফি বাবদ ৫ লক্ষ টাকা দিতে হয়। একই জায়গায় দ্বিতীয় বারের ক্ষেত্রে সেই অঙ্ক ২ লক্ষ টাকার কাছাকাছি।
এতদিন বন্ধ থাকার পর মদের বিক্রী চালু হওয়ায় সংস্থা বা সরকারের ভাঁড়ার যতই ভরুক না কেন, ব্যাপক চিন্তায় রেস্তোরাঁ এবং বার কর্তৃপক্ষ। লকডাউন চলাকালীন মদের দোকান খোলায় ছাড় মিললেও এখনও রেস্তোরাঁ এবং বার খোলায় অনুমোদন দেয়নি রাজ্য।
এই পরিস্থিতিতে সমস্যার মুখে পড়েছেন রাজ্যের রেস্তোরাঁ কাম বার এবং শুধু বারের মালিকরা। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছে দেশের রেস্তোরাঁগুলির সংগঠন ন্যাশনাল রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার (এনআরএআই) কলকাতা চ্যাপ্টার।
প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রে জুন মাসে লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ বাবদ আবগারি শুল্কের ২৫ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ২৫ শতাংশ এবং ডিসেম্বরে ৫০ শতাংশ দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে বার মালিকদের।
নগদের জোগান একটা বড় সমস্যা। বিধিবদ্ধ বকেয়া দেওয়ার সময় পিছিয়ে দিলে রেস্তোরাঁ এবং বার মালিকদের হাতে কিছুটা অর্থ থাকবে বলেই মনে করেন গোল্ডেন সিরাজ রেস্তোরাঁর কর্ণধার।
রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকায় যে সমস্ত কর্মী বেতন পাচ্ছেন না, বিশেষ করে একদম নীচের তলার কর্মীদের অর্থের সংস্থান করার সুপারিশ করা হয়েছে। ইএসআইসিতে গচ্ছিত আমানত থেকে সাময়িক ভাবে সেই কর্মীদের আর্থিক প্রয়োজন মেটানোর কথা বলা হয়েছে।
১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত যে সমস্ত কর্মী বেতন পান, তাঁদের বেতনের অর্ধেক দেওয়ার দায়িত্ব সাময়িক ভাবে রাজ্য সরকারকে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সরকারের কাছে ইসআইসি সুবিধাভোগী কর্মীদের তালিকা রয়েছে এবং এ ক্ষেত্রে সেই তালিকার ব্যবহার করা যেতে পারে বলেই জানিয়েছে রেস্তোরাঁ মালিকদের সংগঠন।
রাজ্য অনুমোদন দিলেও সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহক সমাগম দেখছে না রেস্তোরাঁ মালিকরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কমপক্ষে দু’-তিন মাস সময় লাগবে। অক্টোবরে উৎসবের মরসুম শুরু হওয়া থেকে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত ঠিকঠাক গ্রাহক পেলে লাভের মুখ না দেখলেও অন্তত কার্যকরী মূলধন তুলতে পারবে রেস্তোরাঁগুলি, এমনটাই দাবী।
অক্টোবর থেকে মার্চের মধ্যেই রেস্তোরাঁগুলির বার্ষিক আয়ের ৬০-৬৫ শতাংশ আসে। কাজেই আগামী উৎসবের মরসুমের আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গত বছরের তুলনায় ব্যবসা ৩০% কমবে। আর তা না হলে ব্যবসা প্রায় ৭০% হ্রাস পাবে।
অন্যদিকে, রেস্তারাঁর লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের দিন চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ছ‘মাস বাড়ানোর আর্জি জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ২০২০-২১ অর্থবর্ষের জন্য সাময়িক ভাবে কর্পোরেশন ট্যাক্স না নেওয়ার এবং ছাড়ের দাবী জানানো হয়েছে। এক বছরের জন্য কর্মী এবং নিয়োগকর্তার ভাগের ইএসআই-এর টাকা সরকারকে বহন করার আর্জিও জানিয়েছে রেস্তোরাঁগুলির সংগঠন।