জীবনদায়ী ওষুধ অ্যাসপিরিন ও ইনসুলিনের আকাল রাজ্যজুড়ে
লকডাউনের মধ্যেই বিভিন্ন ধরনের জীবনদায়ী ইনসুলিন, রক্ত পাতলা করার অপরিহার্য অ্যাসপিরিন গোত্রের ওষুধ এবং ভিটামিন সি— এই তিন ধরনের ওষুধের সঙ্কট শুরু হয়েছে রাজ্যে। ফলে বহু রোগী ভোগান্তিতে পড়েছেন। ওষুধ শিল্পমহল ও রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, ইনসুলিনের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশই হিউম্যান ইনসুলিন পর্যায়ের। এছাড়া আরও নানা ধরনের ইনসুলিন নিয়মিত নিতে হয় হাজার হাজার সুগারের রোগীকে। আকাল শুরু হয়েছে মূলত দ্বিতীয় ধরনের ইনসুলিন নিয়ে।
অন্যদিকে হার্ট অ্যাটাক, ইসকিমিক স্ট্রোক, ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস ইত্যাদি অসুখে অপরিহার্য অ্যাসপিরিন। সেই অ্যাসপিরিন গোত্রের ওষুধের সবচেয়ে চালু ব্র্যান্ডগুলির একটিকে নিয়ে চূড়ান্ত নাকাল হচ্ছেন রোগীরা। সেই গ্রুপের ১৫০ মিগ্রার ওষুধ মিললেও ৭৫ মিগ্রার ওষুধ নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অনেকেই। পাশাপাশি, করোনা উপদ্রব শুরু হতে না-হতেই প্রতিরোধ-ক্ষমতা বৃদ্ধিতে লেবু ও ভিটামিন সি নিয়ে বিভিন্ন মহলে চর্চা শুরু হতেই বাজারে বিক্রি বাড়তে শুরু করে ভিটামিন সি’র। ওষুধের দোকানদারদের একাংশের দাবি, অস্বাভাবিক বিক্রি বৃদ্ধিতেই অভাব সৃষ্টি, বিষয়টি এরকম নয়। ভিটামিন সি ভারত সরকারের ন্যাশনাল লিস্ট অব এসেন্সিয়াল মেডিসিনের অন্তর্ভুক্ত। ফলে ড্রাগ প্রাইস কন্ট্রোল অর্ডার মেনে এর দাম সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে কেন্দ্র, মুনাফার সুযোগ থাকে কম। সে কারণে বহু অসাধু সংস্থা আপ্রাণ চেষ্টা করে উৎপাদন কমাতে। পাশাপাশি ভিটামিন সি’র সঙ্গে অন্য উপাদান মিশিয়ে সেটিকে কেন্দ্রীয় সরকারের ড্রাগস অ্যান্ড কসমেটিকস আইন এবং কড়া নজরদারির আওতার বাইরে নিয়ে আসার চেষ্টাও লাগাতার চলতে থাকে। এবারের সমস্যা হচ্ছে মূলত দ্বিতীয় কারণেই, এমনই দাবি বহু পোড়খাওয়া পাইকারি ব্যবসায়ীর।
রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের ওষুধ সরবরাহ সংক্রান্ত বিষয়ের নোডাল অফিসার সুকুমার দাস মঙ্গলবার বলেন, এপ্রিল মাসে ওষুধ সরবরাহ কমবেশি সুনিশ্চিত করা গিয়েছে। ইনসুলিনের ক্ষেত্রে মে মাসের সরবরাহ শুরু হয়েছে। অ্যাসপিরিনের সমস্যা বিচ্ছিন্ন। তবে ভিটামিন সি’র সমস্যা রয়েছে। সব মিটে যাবে বলে দাবি তাঁর।