বার্থ-ভর্তি যাত্রী কেন, কেন্দ্রেরই প্রশ্নে রেল
লকডাউনের ১৫টি রুটের ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় অগণিত মানুষ ঘরে ফিরতে পারছেন ঠিকই। তবে সেই সফরে সামাজিক দূরত্বের নীতি মানা হচ্ছে কি? প্রশ্নটি উঠছে কারণ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়া বাসিন্দাদের ফেরাতে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বিশেষ ট্রেনগুলির প্রতিটি কোচের সব বার্থেই যাত্রীদের বুকিং দিয়েছে রেল। অথচ প্রধানমন্ত্রী বার বার ‘দো গজ কি দূরী’-র কথা বলছেন। সমালোচনার মুখে রেল প্রতিমন্ত্রী সুরেশ অঙ্গাদির যুক্তি, ট্রেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাত্রীদেরও দায়িত্ব।
সরকারি সূত্রে খবর, রাজধানী ট্রেনের কামরাগুলিকে বিশেষ ট্রেন বলে চালানো ও সেগুলির প্রতিটি বার্থে যাত্রী রাখার বিষয়টি নজরে আসার পরই কেন্দ্রের শীর্ষ স্তর থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, যার জবাব দিতে গিয়ে কালঘাম ছুটছে রেল মন্ত্রকের। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে সুরেশ অঙ্গাদি বুধবার বলেন, ‘বিশেষ ট্রেন চালানোর বিষয়টি পরীক্ষামূলক৷ যাত্রীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত অসুবিধা থাকলে তা দ্রুত শুধরে নেওয়া হবে৷’ মন্ত্রক সূত্রে খবর, আরও বেশি সংখ্যক শ্রমিক স্পেশ্যাল ও যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হলে বাতানুকুল তৃতীয় শ্রেণী ও সাধারণ থ্রি টায়ার স্লিপার কামরার মাঝের বার্থের বুকিং বাতিল করা যায় কি না, সেই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
এই ভাবনা আগেই কার্যকর করা হল না কেন? হিসেব বলছে, এই পরিষেবা চালু হওয়ার প্রথম দিনে টিকিট বিক্রি থেকে রেলের আয় হয় ১৬ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা৷ ভবিষ্যতেও কি এই লাভের অঙ্ক ভেবেই পরিকল্পনা করবে রেল? সুরেশের বক্তব্য, ‘লকডাউনের শুরু থেকেই পণ্য পরিবহন করছে রেল৷ এখন যাত্রী পরিবহণ শুরু হয়েছে৷ প্রত্যেক যাত্রীকে অনুরোধ, নিজেরাও সতর্ক থাকুন৷ করোনা প্রতিরোধে আপনাদেরও দায়িত্ব রয়েছে৷ সফরের সময়ে ভারত সরকারের নির্দেশিকা মেনেই ব্যবস্থা করা হবে।’ কার্যত এক সুরে কথা বলেছে আইআরসিটিসি। তাদের সতর্কবাণী, সফরের সময়ে স্বাস্থ্যের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট যাত্রীরই।
তবে প্রতিমন্ত্রীর যুক্তি, রেল নিজের দায়িত্ব ঠিক ভাবেই পালন করছে। তাঁর কথায়, ‘শুধুমাত্র করোনার লক্ষণহীন ব্যক্তিদেরই ট্রেনে সফর করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে৷ তাঁদের প্রত্যেকের থার্মাল চেকিং করা হচ্ছে৷’ এ সবের মাঝেই এ দিন নয়াদিল্লিতে রেল মন্ত্রকের এক কর্মী করোনা পজিটিভ ধরা পড়লে বৃহস্পতি ও শুক্রবার রেলভবন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই দু’দিনে সেটিকে স্যানিটাইজ করা হবে।