সাধারণ নাগরিকদের সৈনিক জীবনের স্বাদ দিতে তিন বছরের ‘ট্যুর অফ ডিউটি’ প্রকল্পের ভাবনা সেনার
সাধারণ নাগরিকদের স্বল্প সময়ের জন্য সামরিক জীবনের স্বাদ দিতে অভিনব পরিকল্পনা ভারতীয় সেনার। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ট্যুর অফ ডিউটি বা ‘থ্রি ইয়ার্স শর্ট সার্ভিস স্কিম’-এর আওতায় ইচ্ছুক সাধারণ নাগরিকরা তিন বছরের জন্য ১৩ লক্ষ শক্তিশালী সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারেন।
সংবাদসংস্থা সূত্রে খবব, সেনার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা এই অভিনব প্রস্তাবের বিষয়ে গুরত্ব সহকারে বিচার করছেন। যদি অনুমোদন মেলে, তাহলে ভারতবর্ষের যে কোনও নাগরিক স্বেচ্ছায় এই তিন বছর সেনায় যোগ দিতে পারেন। তবে, যোগ দেওয়ার যোগ্যতার মাপকাঠিতে কোনও প্রকার পরিবরর্তন করা হবে না বলেও জানানো হয়েছে প্রস্তাবে। সেনা মুখপাত্র কর্নেল আমন আনন্দ জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে অফিসার পদে ১০০ জন ও জওয়ান পদে এক হাজারকে নিয়ে পাইলট প্রজেক্ট শুরু করা হবে।
সূত্রের খবর, এই পরিকল্পনার লক্ষ্য হল বাহিনীতে সেরা প্রতিভার আমদানি করা এবং একইসঙ্গে নাগরিক সমাজকে সেনাবাহিনীর আরও কাছে নিয়ে আসা। যে কারণে, নাগরিকদের একটি সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, জীবনের কিছুটা সময় তাঁরা যাতে একজন সৈনিকের জীবন অতিবাহিত করতে পারেন, জীবনে সামরিক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন।
সেনার এক কর্তা জানান, যদি এই প্রজেক্টকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়, তাহলে অনেকেই উপকৃত হবেন। বিশেষ করে, এমন অনেক যুবা রয়েছেন, যাঁরা সেনাতে পূর্ণ সময়ের জন্য যোগ দিতে চান না, তাঁরা এই স্বল্পসময়ের যোগদানের সুবিধার সুযোগ নিতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের প্রতিরক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতীয় সেনায় অফিসার পদে ১৪ শতাংশ খামতি রয়েছে। বর্তমানে সেনায় ৪২,২৫৩ সেনা রয়েছে এবং ১১.৯৪ লক্ষ জওয়ান রয়েছে। সেই জায়গায় নৌসেনায় ১০ হাজার অফিসার রয়েছেন এবং ৫৭,৩১০ জন জওয়ান ও নাবিক রয়েছেন।
বর্তমানে, যে শর্ট সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) রয়েছে, তাতে একজন সর্বোচ্চ ১০ বছরের জন্য সেনায় যুক্ত থাকতে পারেন। সূত্রের খবর, সেনার শীর্ষ কর্তারা চাইছেন, এই শর্ট সার্ভিস কমিশনকেও যুবসমাজের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে নতুন রূপে পেশ করতে। এর জন্য, এসএসসি-র পর্যালোচনা চলছে। প্রথমদিকে, এসএসসি পাঁচ বছরের মেয়াদ নিয়ে শুরু হয়েছিল। পরে, তার মেয়াদ বৃদ্ধি করে ১০ বছর করা হয়।
এদিকে, জওয়ানদের অবসরের বয়স বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জোনরেল বিপিন রাওয়াত। তিনি জানান, একজন প্রশিক্ষিত সেনা জওয়ান ১৫ বছর যুক্ত থাকার পর অবসর নেন। এর ফলে, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীর অভাব হয়ে পড়ে। অবসরের বয়স বাড়ানো হলে, উপকৃত হবে তিন বাহিনীই।