বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

লকডাউনে স্তব্ধ সবংয়ের ঐতিহাসিক মাদুরের শিল্প

May 14, 2020 | 2 min read

শুধু দেশে নয়, গোটা বিশ্বের দরবার থেকে খ্যাতি কুড়িয়েছে সবং-এর সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার মাদুর শিল্প। কিন্তু লকডাউনের দু’মাসে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে তা। এলাকার প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষের রুটি-রুজির একমাত্র সম্বল এই শিল্পের যাবতীয় কারবার বন্ধ। ফলে প্রায় পৌনে দু’লক্ষ মানুষের অন্নসংস্থান এখন প্রশ্নের মুখে। দুর্গত পরিবারগুলিকে বাঁচাতে এখন সবং মাদুর ব্যবসায়ী সমিতি দ্বারস্থ হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

লকডাউনে স্তব্ধ সবংয়ের ঐতিহাসিক মাদুরের শিল্প

পশ্চিম মেদিনীপুরের গোটা সবং ব্লক ছাড়াও লাগোয়া পটাশপুর, পিংলা এবং নারায়ণগড়ের কিছু মানুষ এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। মাদুর কাঠির চাষ, বুনন এবং কেনাবেচা— মোটামুটি এই তিন ক্ষেত্রের মানুষ এই শিল্পের উপর নির্ভরশীল। সবং-এর মোট ২ লক্ষ ৯৩ হাজার বাসিন্দার মধ্যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় পৌনে দু’লক্ষ মানুষের পেটের ভাত জোটে এই শিল্প থেকেই। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে তৈরি হাজার চারেকের বেশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত শিল্পীদের সিংহভাগই মহিলা। একইভাবে কয়েক হাজার কৃষক রয়েছেন যাঁরা মাদুর কাঠি চাষের সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া হাট-বাজার এবং বাংলা-ওড়িশায় বেচাকেনায় যুক্ত আরও বহু মানুষ। লকডাউনে তাঁদের সকলেরই এখন নাভিশ্বাস উঠেছে। ঘরে এবং বিভিন্ন গুদামে পড়ে থাকা কোটি কোটি টাকার মাদুর রক্ষণাবেক্ষণের সমস্যায় নষ্ট হওয়ার মুখে। বেচাকেনা এখনই শুরু না করা গেলে এই খাতে বিপুল ক্ষতি প্রায় নিশ্চিত।

মাদুরচাষিদের বক্তব্য, বছরে দু’বার কাঠি ওঠে জমিতে। চলতি বৈশাখ মাসে কাঠি কাটা হয় একবার। দ্বিতীয়বার কার্তিক মাসে। সেই হিসেবে এখন একরের পর একর জমিতে মাদুর কাঠি ওঠার অপেক্ষায়। কিন্তু বেচাকেনা বন্ধ বলে তাঁরা কেউ কাঠি কাটতে সাহস করছেন না। এরপর অতিরিক্ত গরম ও বৃষ্টিতে কাঠি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এই অবস্থায় দেখা দিয়েছে টাকার দারুণ অভাব। মাদুর ব্যবসায়ী সমিতি’র অন্যতম কর্তা নরেন্দ্রনাথ বেরা বলেন, প্রশাসনের সব পর্যায়ে আমরা দরবার করেছি এই সমস্যা নিয়ে। মাদুর কেনাবেচা বা পরিবহণের কাজ চালু না করলে চরম বিপদ ঘনিয়ে আসবে শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অগণিত মানুষের জীবনে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #lock down, #Madur

আরো দেখুন