রাজ্যের মত নিয়েই জোন বিভাজন করবে কেন্দ্র
রাজ্যগুলির গুরুত্ব বাড়িয়ে এবং অর্থনীতিকে যথাসম্ভব সচল রেখে লকডাউন ৪.০ কার্যকর হতে চলেছে দেশে। দিনকয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনা-মোকাবিলার রূপরেখায় রাজ্যগুলির ভূমিকা বৃদ্ধির কথা বলেছিলেন। সরকারি সূত্রের খবর, কেন্দ্র সম্ভবত সে পথেই হাঁটবে। তবে যেটাই করা হোক, কোভিড সংক্রান্ত স্বাস্থ্যনীতি বজায় রাখার উপরে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
অর্থনীতির চাকা সচল রেখেই যে লকডাউনের চতুর্থ পর্যায়টি শুরু হবে, সে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু নতুন যে বিষয়টি সামনে আসছে, তা হল রাজ্যগুলির উপরে আরও বেশি দায়িত্ব দেওয়া। ১৭ তারিখ থেকে শুরু লকডাউনের চতুর্থ পর্বের রূপায়ণ সংক্রান্ত নীল-নকশা তৈরি করেছে প্রধানমন্ত্রী গঠিত এমপাওয়ার্ড কমিটি।
এই পর্বে কোথায় কতটা ছাড় থাকবে, তা ঠিক করার ভার কমিটি সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির উপরে দেওয়ার সুপারিশ করেছে। যুক্তি হল, ভারতের মতো বিশাল দেশে সামগ্রিক ভাবে এই কাজটি করার থেকে ‘মাইক্রো লেভেলে’ করলে তার কার্যকারিতা বেশি হবে। আজ, শুক্রবার নয়াদিল্লিতে বৈঠকে বসবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিগোষ্ঠী। সেখানেই কমিটির সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, করোনা রুখতে সবথেকে কার্যকরী হতে পারে রাজ্যের তৈরি পরিকল্পনা। করোনা প্রভাবিত অঞ্চলগুলিকে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করে সেখানে সম্পূর্ণ লকডাউন বহাল রেখে অন্য এলাকাগুলিতে জনজীবন স্বাভাবিক করে তোলার ক্ষমতা থাকা উচিত রাজ্যেরই হাতে৷ সরকারি সূত্রের খবর, কমিটির সুপারিশও প্রায় এক।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বিহার, ছত্তিসগড়, রাজস্থান, পাঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলিও জোন-বিভাজনের পদ্ধতিতে আপত্তি জানিয়েছিল। একটি বড় এলাকায় জনা পনেরো রোগী থাকলে যে ভাবে গোটা এলাকাকেই রেড জোন হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তাতে আপত্তি ছিল অনেক রাজ্যের। এই আপত্তিকে গুরুত্ব দিয়েছে কমিটি। তাদের সুপারিশ, জোন চিহ্নিতকরণে রাজ্যের পরামর্শ নেওয়া হোক। শুধুমাত্র রোগীসংখ্যার ভিত্তিতে জোন-বিভাজনের বিরুদ্ধে কমিটি মত দিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
তবে সবথেকে বেশি করোনা প্রভাবিত রাজ্যগুলির জন্য বিশেষ সতর্কতা বহাল রাখার পক্ষে কমিটি সওয়াল করেছে৷ মহারাষ্ট্র, গুজরাট, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও মধ্যপ্রদেশে এই মুহূর্তে যে পরিস্থিতি রয়েছে, সেখানে বড় রকমের ছাড় দেওয়া বিপজ্জনক বলে কমিটি মনে করে। অর্থনীতির কথা চিন্তা করে এই সব রাজ্যে করোনা প্রভাবিত অঞ্চলের বাইরে ছোট ছোট ক্লাস্টার তৈরি করে সেখানে শর্তসাপেক্ষ ছাড়-সহ বাণিজ্যিক গতিবিধি শুরু করার পক্ষে সওয়াল করেছে কমিটি।