করোনায় আক্রান্ত বাড়ছে বাহিনীতে
নিরাপত্তাবাহিনী মধ্যে ক্রমেই বেড়ে চলেছে করোনা প্রভাব। এ বার করোনা আক্রান্ত হলেন হাওড়া স্টেশনে মোতায়েন দুই আরপিএফ কর্মী। শুক্রবার নতুন করে করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্সে ও ভারতীয় যাদুঘরের দুই সিআইএসএফ জওয়ানের মধ্যে। কলকাতা পুলিশের কমব্যাট ফোর্সের এক এএসআইয়ের আক্রান্ত হয়েছেন। খবর পাওয়া গিয়েছে, সাউথ ট্রাফিক গার্ডের দুই কনস্টেবলও আক্রান্ত। তবে ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন প্রগতি ময়দান থানার ওসি চন্দন রায় মুখার্জী ও ওসি-বউবাজার সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন জোড়াসাঁকো থানার এক এএসআইও।
স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যেও কোভিড পজিটিভ হওয়ার ধারা অব্যাহত। কয়েক দিন আগেই আইডি হাসপাতালের এক নার্স ও দুই স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হন। এ দিন আরও দুই স্বাস্থ্যকর্মী করোনা পজিটিভ হয়ে ভর্তি হয়েছেন আইডি হাসপাতালেই। স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে সিল করে দেওয়া হয়েছে আইডি-র কর্মী আবাসনে ঢোকা-বেরোনোর রাস্তাও। এ দিন স্বাস্থ্য দপ্তর প্রকাশিত বুলেটিনে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৪ জন। সব মিলিয়ে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৪৬১ জন। বর্তমানে তাঁদের মধ্যে ১৪০৭ জন চিকিৎসাধীন বিভিন্ন হাসপাতালে।
গত মঙ্গলবারই হাওড়া স্টেশনে মোতায়েন দুই আরপিএফ জওয়ানের সোয়াব নমুনা পাঠানো হয়েছিল পরীক্ষার জন্য। শুক্রবার তাঁদের পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এর পর তাঁদের হাওড়ার রেলওয়ে অর্থোপেডিক হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। ওই দু’জনের মধ্যে একজন হেড কনস্টেবল এবং অন্যজন কনস্টেবল। গত কয়েক দিন ধরে তাঁরা হাওড়া স্টেশনে ডিউটিও করেছিলেন বলে খবর। স্টেশন সংলগ্ন আরপিএফ ব্যারাকে থাকতেন।
আরপিএফ এর সিনিয়র কমান্ড্যান্ট রজনীশ ত্রিপাঠী দু’জনের করোনা সংক্রমনের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘ওই দুই কর্মী চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর পাশাপাশি আরপিএফ ব্যারাকটিকে জীবাণুমুক্তকরণ করা হয়েছে।’ করোনা মোকাবিলায় সব রকম প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। এই সংক্রমণের খবর চাউর হতেই অন্যান্য আরপিএফ কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে তাঁরা কী ভাবে সংক্রিত হয়েছেন তা এখনো পরিষ্কার নয়। হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে থেকেই হাওড়া স্টেশন চত্বরে রেলওয়ে অফিসারদের তৎপরতা বাড়ে। বিশেষ ট্রেন চলাচল শুরু হতে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। তাই সেখান থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিডেটে করোনা ধরা পড়ল আর একজনের। গত ১১ মে করোনা আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যুর পর একসঙ্গে ৩৮ জনের করোনা ধরা পড়ে সিআইএসএফের ওই ইউনিটের। তবে ইতিমধ্যেই একজন সুস্থ হয়ে ছাড়া পেয়েছেন। এখনও ৩৯ জন চিকিৎসাধীন। ২৩ মার্চ থেকে জিআরএসইতে উৎপাদন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম বন্ধ। ফলে সেখানে করোনার সংক্রমণ কী ভাবে ছড়ালো তাও স্পষ্ট নয়। তবে ২৩ মার্চের আগে পর্যন্ত কাজ চালু ছিল। অনেকেই ছুটি থেকে যোগ দেন। শ্রমিকারও কাজে আসতেন। সেই সূত্রেই সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।