বেসরকারিকরণের ঢালাও ছাড় মোদি সরকারের
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, বিভিন্ন সেক্টর তথা ক্ষেত্র ধরে ধরে তার প্রস্তাবগুলি গত চার দিন ধরে ব্যাখ্যা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আজ রবিবার পঞ্চম তথা শেষ কিস্তির ঘোষণা করলেন নির্মলা।
আজকের ঘোষণা এক নজরে:
একশো দিনের কাজ প্রকল্পে আরও চল্লিশ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করবে কেন্দ্রীয় সরকার। কারণ, একশ দিনের কাজ প্রকল্পে পরিযায়ী শ্রমিকরাও এখন কাজের আবেদন করছেন। তাঁদের কাজের সুযোগ দিচ্ছে সরকার। ৩০০ কোটি অতিরিক্ত শ্রম দিবস কাজ হবে মনে করা হচ্ছে। সেই কারণেই বরাদ্দ বাড়ানো হল।
সব জেলায় একটি করে সংক্রামক রোগ চিকিৎসা হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে।
সব জেলায় একটি করে পাবলিক হেল্থ ল্যাবরেটরি তৈরি করা হবে। সেই সঙ্গে দেশের সব ব্লকে একটি করে পাবলিক হেল্থ ইউনিট তৈরি করা হবে। যাতে করে এই মহামারীর মোকাবিলা করা সহজ হয়। এবং আগামী দিনে এই ধরনের কোনও সংক্রমণ ছড়ালে তা মোকাবিলার প্রস্তুতি সরকারের থাকে।
পিএম বিদ্যা- প্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল/অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা অবিলম্বে চালু করা হবে।
এ ব্যাপারে গোটা দেশে স্কুল শিক্ষার জন্য একটি অভিন্ন শিক্ষা-প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হচ্ছে। তার নাম দীক্ষা। স্কুল শিক্ষার সমস্ত কনটেন্ট এই প্ল্যাটফর্মে থাকবে।
প্রতিটি শ্রেণির জন্য নিবেদিত একটি করে চ্যানেল খোলা হবে। যার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের পাঠ দেওয়া হবে।
এ ছাড়া ছাত্র ও শিক্ষকদের জন্য মনদর্পণ নামে একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হবে। কারণ, লকডাউনের ফলে ছাত্রছাত্রীদের যে মানসিক প্রভাব পড়েছে তা দূর করা জরুরি।
ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে দেউলিয়া ঘোষণা করার সীমা বর্তমানের ১ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ কোটি করা হয়েছে। কোভিডের জন্য যদি কোনও প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যায়, তাহলে অন্তত এক বছর তার বিরুদ্ধে কোনও মামলা করবে না সরকার। তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দেবে।
কোম্পানি আইনের অপরাধীকরণের ধারাগুলি যথাসম্ভব তুলে দেওয়া হবে।
বেসরকারি সংস্থাগুলিকে আরও বেশি সংখ্যক ক্ষেত্রে অপারেট করতে দেওয়া হবে। কৌশলগত ক্ষেত্রে ছাড়া সব ক্ষেত্র বেসরকারি সংস্থার জন্য খুলে দেওয়া হবে। তা ছাড়া কোনও ক্ষেত্রে যদি একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ব্যবসা থাকে, তা হলে সেই সব রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে মিশিয়ে একটি সংস্থা করা হবে।
কেন্দ্রের মতো রাজ্যগুলির রাজস্ব ঘাটতি যে কমছে তা আমরা জানি। অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী রাজ্যগুলিকে বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী যে ৪৬,০৩৮ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল তা এপ্রিলেই দেওয়া হয়েছে।
তা ছাড়া, রাজ্য সরকারগুলির রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে ১২৩৯০ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে।
বিপর্যয় মোকাবিলা খাতে রাজ্যগুলিকে আরও ১১,০৯২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক কোভিড মোকাবিলায় রাজ্যগুলিকে ৪১১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রাজ্যগুলিকে দেওয়া অগ্রিম ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ওভারড্রাফ্ট লিমিট ১৪ দিন থেকে বাড়িয়ে ২১ দিন করা হয়েছে।
রাজ্যগুলি তাদের মোট উৎপাদনের ৩ শতাংশ ধার নিতে পারে। অর্থাৎ ৬.১৯ লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত ধার নিতে পারে।
রাজ্যগুলির ধার নেওয়ার অধিকার রাজ্যের মোট উৎপাদনের ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। যার ফলে আরও ৪ লক্ষ ২৮ কোটি টাকা ধার নিতে পারবে রাজ্যগুলি।