এমনিতেই ধুঁকছে সিনেমা হলগুলি,লকডাউনের জেরে হাল আরও করুণ
প্রতিযোগিতার বাজারে যুঝতে না পেরে এমনিতেই জৌলুস হারিয়েছে সিনেমা হলগুলি। লকডাউনের জেরে এই ব্যবসা এবার অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে। গত দেড় থেকে দু’মাসে প্রায় ৬০-৮০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর। যার জেরে ভবিষ্যতে হল চালানো নিয়ে অথৈ জলে মালিকরা।
শহর থেকে আধা শহর, প্রচলিত সিনেমা হলের বাজারে থাবা বসিয়েছে মাল্টিপ্লেক্স। কলকাতার বুকে একে একে বন্ধ হয়েছে মিত্রা, রাধা, উত্তরা, চ্যাপলিন, মালঞ্চ, এলিট, মেট্রো। ধুঁকছে টকি শো হাউস, দর্পণা, মিনার, প্রাচী। আধুনিক হয়ে মোটামুটি ভালোই চলছে নবীনা, প্রিয়া, অশোকা, জয়া, অজন্তার মতো হলগুলি। বিগত কয়েক দশকে রাজ্যের প্রায় ৭৫০টি হল বন্ধ হতে হতে বর্তমানে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৩০০ থেকে ৩৫০টি। প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে রাজ্য জুড়ে কর্মসংস্থানের হিসেব ধরলে সংখ্যাটা কমবেশি কুড়ি হাজারের কাছাকাছি।
লকডাউনের জেরে হল বন্ধ। কিন্তু, কর্মচারীদের মাইনে, ন্যূনতম ইলেকট্রিক খরচ, মেশিনের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ধরলে কয়েক লক্ষ টাকা মাস গেলে বেরিয়ে যাচ্ছে মালিকদের। শহরের হলগুলি কিছুটা চললেও মফসসল বা গ্রামের দিকে হলগুলির অবস্থা আরও সঙ্গীন। এই অবস্থায় মালিকদের আশঙ্কা, বর্তমানে যে কটা হল তাও চলছে, লকডাউন পরবর্তী সময়ে তা একধাক্কায় অর্ধেক হয়ে যেতে পারে। কেননা, অনেকেই এই ক্ষতির ধাক্কা সামলে উঠতে পারবেন না।
অনেকের মতে, হল খোলা সম্ভব হলেও থাকবে নানা ধরনের বিধিনিষেধ। আগে যেখানে দিনে তিন থেকে চারটি শো করা সম্ভব হত, সেই সংখ্যা দুই থেকে তিনটি হয়ে যাবে। একটি শো শেষ হওয়ার পর হল স্যানিটাইজ করতে হবে। সেক্ষেত্রে বর্তমানে ১৫ মিনিটের ব্যবধান বেড়ে অন্ততপক্ষে আধঘণ্টা থেকে ৪৫ মিনিট হতে বাধ্য। আপাতত, সব টিকিট বিক্রি করা যাবে না। অর্ধেক আসনের টিকিট বিক্রি করতে হতে পারে। সর্বোপরি, আপাতত কিছুদিন ঝুঁকি এড়াতে সিনেমা হলেও মানুষ ঢুকতে চাইবেন না। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি কী হবে, তা আঁচ করতে পারছেন না হল মালিকরা।