মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাস খুঁজবে কুকুর, ট্রায়াল শুরু ব্রিটেনে
এবার মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাস খুঁজবে প্রশিক্ষিত কুকুর! শুনতে অবাক লাগলেও শনিবার থেকে এর ট্রায়াল শুরু করার অনুমতি দিয়েছে ব্রিটেন সরকার। মেডিক্যাল ডিটেকশন কুকুরদের ঘ্রাণশক্তিকে এই কাজে ব্যবহার করা হবে। ইতিমধ্যেই ক্যান্সার, ম্যালেরিয়া, পারকিনসনে আক্রান্ত রোগীদের খুঁজে বার করতে এই পদ্ধতি বিশেষ সাফল্য পেয়েছে। তাই এবার মানুষের দেহে মারণ ভাইরাস শনাক্ত করার ক্ষেত্রে এই প্রশিক্ষিত কুকুর কাজে আসে কি না, তাই পরখ করে দেখতে চাইছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইতিমধ্যেই ব্রিটেনে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি, মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার মানুষের। সংক্রমণে রাশ টানতে হিমশিম খাচ্ছে বরিস জনসনের সরকার। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ট্রায়াল সফল হলে, সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। পাশাপাশি গোটা বিশ্বে তা তোলপাড় ফেলে দেবে। ট্রায়ালের প্রথম ধাপের দায়িত্বে রয়েছেন লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের গবেষকরা। তাঁদের সাহায্য করবে চ্যারিটি মেডিক্যাল ডিটেকশন ডগস ও ডুরহাম বিশ্ববিদ্যালয়। এই ট্রায়ালের জন্য ব্রিটেন সরকার ইতিমধ্যেই ৫ লক্ষ পাউন্ড বরাদ্দ করছে।
ব্রিটেনের স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছে, প্রথম ধাপে করোনায় আক্রান্ত ও সুস্থ মানুষের গায়ের গন্ধের নমুনা জোগাড় করবেন ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিসের কর্মীরা। এরপর ছ’টি বায়ো ডিটেকশন কুকুরকে সেগুলি দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। গবেষকদের আশা, এই ট্রায়াল সফল হলে উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগেই আক্রান্তকে চিহ্নিত করা যাবে। সব কিছু ঠিকঠাক চলছে, ঘণ্টায় ২৫০ জন করোনা আক্রান্তকে খুঁজে বের করে দেবে এই বিশেষ কুকুরগুলি।
এদিকে, বিশ্বজুড়ে করোনার হানায় মৃত্যুমিছিল বেড়েই চলেছে। শনিবার পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ৯ হাজার মানুষের। পাশাপাশি, আক্রান্তের সংখ্যাও ৪৬ লক্ষ ৪৩ হাজার ছাড়িয়েছে। দেশের নিরিখে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমেরিকা। সবমিলিয়ে সেখানে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে ১৪ লক্ষ ৮৪ হাজার এবং ৮৮ হাজার ৫০৭ জন। এদিকে, করোনার ধাক্কায় মার্কিন অর্থনীতিরও বেসামাল অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে থেকে বেরতে ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের আর্থিক প্যাকেজের প্রস্তাব দিয়েছিলেন স্পিকার ন্যান্সি পেলসি। শুক্রবার হাউসে তা পাশ হয়ে গিয়েছে। তবে সেনেট ও হোয়াইট হাউস এতে অনুমোদন দেবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
মারণ ভাইরাসের প্রকোপে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ইতালিতেও। এখনও পর্যন্ত সেখানে প্রাণ হারিয়েছে ৩১ হাজার ৬১০ জন। সেই সঙ্গে, ভেনিস সহ একাধিক শহরের পর্যটন ব্যবসাও মুখ থুবড়ে পড়েছে। তবে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় বিধিনিষেধ ধীরে ধীরে তুলে দেওয়া হচ্ছে। ভেনিস পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। মিলানেও দোকানপাট খুলছে। পাশাপাশি, দেশের মধ্যে যাতায়াতের উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল, তাও শিথিল করছে প্রশাসন। এদিকে, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলেও দেশের মধ্যে বিমান পরিষেবা চালু করল পাকিস্তান। অন্যদিকে, সিঙ্গাপুরে মারণ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ হাজার ৩৫৬-তে পৌঁছে গিয়েছে।