করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক নাও মিলতে পারে আশঙ্কা ‘হু’র
এ যেন নতুন কোনও বিশল্যকরণী বটিকার খোঁজ। রাতদিন এক করে কাজ করছেন গোটা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা। করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক চাই এবং খুব শিগগির। বেশ কিছু ক্ষেত্রে সম্ভাব্য টিকার হিউম্যান ট্রায়ালও শুরু হয়েছে। সেপ্টেম্বরের দিকে টিকা হাতে চলে আসতে পারে, এমন আশার বাণীও শোনা যাচ্ছে।
কিন্তু তার সঙ্গেই সামনে আসতে শুরু করল কিছু ভিন্ন মত। যেমনটা শোনা গেল লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের অধ্যাপক ডেভিড নেবারোর গলায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনা সংক্রান্ত বিশেষ দূত তিনি। নেবারোর আশঙ্কা, প্রতিষেধক মিলবেই, একথা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি না। এমন অনেক ভাইরাস আছে, যাদের কোনও টিকা আজ পর্যন্ত মেলেনি।
নেবারোর এই মন্তব্য নিশ্চিতভাবেই দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে। এহেন মন্তব্যের পক্ষে বেশ কিছু উদাহরণও তুলে ধরেছেন তিনি। এই বিজ্ঞানী বলেন, শুরুর দিকে মনে হয়ে ছিল, এইচআইভি-র টিকা শীঘ্রই মিলবে। কিন্তু প্রায় চার দশকে ৩ কোটি ২০ লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়েছে এই ভাইরাস। তা সত্ত্বেও মেলেনি কোনও জীবনদায়ী টিকা। ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক খোঁজার চেষ্টা চলছে আরও আগে থেকে। মেলেনি ডেঙ্গুর কোনও কার্যকরী টিকাও। এইসব উদাহরণ টেনে নেবারো বলছেন, করোনা ভাইরাসকেও নিরন্তর মোকাবিলা করে চলার জন্য তৈরী থাকতে হতে পারে বিশ্বকে।
এদিকে সামনে এসেছে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা। ভাইরাস খতম করতে সক্ষম অ্যান্টিবডি তৈরী করা গিয়েছে বলে দাবি করেছেন ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নাফতালি বেনেট। তাঁর দাবী, দেশের প্রধান জৈব গবেষণা কেন্দ্রে এই অ্যান্টিবডি তৈরী করা হয়েছে। এমনকী রোগীর শরীরে প্রয়োগের পর তাতে কাজও হচ্ছে। এই আবিষ্কার করোনা ভাইরাসের ওষুধ তৈরীর ক্ষেত্রে বড় সাফল্য হয়ে উঠতে পারে। এটির পেটেন্ট নেওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে।
বোঝা যাচ্ছে, নেবারো যাই বলুন, অধিকাংশ বিজ্ঞানী আশা ছাড়তে নারাজ। যেমন ব্রিটেনের ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ-এর ডিরেক্টর অ্যান্টনি ফাউচি। তাঁর বক্তব্য, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যেই মিলে যাবে প্রতিষেধক। তেমন ক্ষমতাসম্পন্ন অ্যান্টিবডির হদিশ মিলেছে বলে দাবী করেছে ইউত্রেখত বিশ্ববিদ্যালয়ও।
নেদারল্যান্ডসের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বেরেন্ড-ইয়ান-বশ বলেন, পরীক্ষাগারে এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরী করা হয়েছে, যা করোনা ভাইরাসকে খতম করতে পারে। যদিও এই গবেষণা এখনও প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। তবে পরীক্ষাগারে ভাইরাসের উপর এর প্রয়োগ সাফল্য পেয়েছে। অন্যদিকে, আমেরিকার ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক গবেষক কমলেশ সিংয়ের দাবি, রেমডেসিভির, রিবাভিরিন, ৫-ফ্লোরোরাসিল ও ফাভিপিরাভির — চারটি ওষুধ করোনার চিকিৎসায় কাজে দিচ্ছে।