পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আরও ১২০ ট্রেন চালাবে বাংলা: মমতা
পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে আরও স্পষ্ট করে নিজের অবস্থান বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, ‘বাস ও ট্রেনে আড়াই-তিন লক্ষ মানুষ বাংলায় এসেছেন। রাজনৈতিক দলগুলিকে বলব সহযোগিতা করুন। উসকানি নয়, এটা রাজনীতি করার সময় নয়। সীমানায় কেউ এলে আগাম খবর দিয়ে আসুন।’
সেই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘ইতিমধ্যে ১৬টি ট্রেন রাজ্যে চলে এসেছে। বাইরে ২০-২৫ লক্ষ বাংলার লোক, এই তথ্য ঠিক নয়। বাকি রাজ্যগুলিকে বলব পরিযায়ীদের যত্ন নিন। অন্য রাজ্যের অনেক মানুষ এ রাজ্যে থাকেন। একসঙ্গে এত মানুষ ঢুকলে কীভাবে স্ক্রিনিং সম্ভব। সরকারকে সময় দিন, পরিকল্পনা করে কাজ হচ্ছে। কেউ কেউ ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে। ১০০টি ট্রেন বুক করেছে পশ্চিমবঙ্গ। ২-৩ দিনের মধ্যে আরও ১২০টি ট্রেন চাইব। প্রতিদিন ১০টি করে ট্রেন ঢুকবে রাজ্যে। ২৩৫টি ট্রেনের সব খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার।’
বিভিন্ন বিষয়ের পাশপাশি পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে রাজ্য সরকারকে ক্রমাগত আক্রমণ করে চলেছে বিজেপি। এ দিন গেরুয়া শিবিরের নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী সাফ বলেন, ‘যারা বলছেন, বাস পাঠিয়ে দিন, তাঁরাও কিছু করুন। অনেক রাজ্য পরিযায়ীদের দায়িত্ব পালন করছে না। এই দুঃসময়ে কোনও ভেদাভেদ নয়। জেলাগুলিও যাতে ভাল থাকে তাও দেখতে হবে। আমি চাই সবাই ফিরুক, কিন্তু সংক্রমণ ছড়ালে কী হবে। অনেকে প্ররোচনা দিচ্ছেন, তারা ক্ষমতায় থেকে কী করেছেন। কেন্দ্র পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। আমাদের নিতে বললে পারব না।’
দিন কয়েক আগেই শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে চিঠি দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে আসা ট্রেন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। রাজ্য সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি অবিচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এখনও পর্যন্ত কেন্দ্র এই লকডাউনের মধ্যে ২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে ঘরে ফিরে যেতে সাহায্য করেছে বলে চিঠিতে দাবি করেছেন অমিত শাহ। রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার ফলে শ্রমিকদের দুর্দশা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
পালটা বিজেপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তোলে তৃণমূল। বাস্তবেও অবশ্য পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে নানা দিকে সমালোচনাও হচ্ছে। সেক্ষেত্রে যে সমস্ত রাজ্যের ক্ষমতায় বিজেপি নেই, তাঁদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের পরিযায়ী নীতি নিয়ে সরব হয়েছে ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়ের মতো রাজ্যও। এই পরিস্থিতিতে মমতার সরাসরি আক্রমণ কেন্দ্রীয় সরকারকে আরও কোনঠাসা করল বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।