দেশ বিভাগে ফিরে যান

প্যাকেজের মোড়কে দেশীয় সব শিল্পই বেসরকারি হাতে সব কেড়ে নিচ্ছে জুমলা সরকার: মমতা

May 18, 2020 | 2 min read

মোদি সরকারের ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণার শেষদিনেও ঢালাও বেসরকারিকরণেই আস্থা রাখা হল। শুধু বাছাই করা শিল্পক্ষেত্রই নয়, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির অধীন প্রায় সব ক্ষেত্রেই কর্পোরেট অনুপ্রবেশে সিলমোহর দিয়েছে মোদি সরকার। বেসরকারি সংস্থাকে স্থান করে দিতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির সংযুক্তিকরণ ও বিলগ্নিকরণ করা হবে। কমিয়ে আনা হবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার একচ্ছত্র অধিকার। কেন্দ্রের বেসরকারিকরণের সঙ্গে এবার রাজ্যকেও সংযুক্ত করার কথা বলা হয়েছে প্যাকেজে। যার চরম বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যগুলির হাতে অধিক অর্থ পৌঁছে দিতে সরাসরি কোনও সহায়তা না দিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী রাজ্যের ঋণগ্রহণের উর্ধ্বসীমা মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার ঘোষণা করেছেন আজ। কিন্তু তার সঙ্গে আর্থিক সংস্কারের শর্ত আরোপ করেছেন বেশ কিছু। আর এই শর্ত আরোপের সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বলেছেন, ৩ শতাংশ থেকে রাজ্যের ঋণগ্রহণের ক্ষমতা ৫ শতাংশে বাড়ানোর ক্ষেত্রে যে শর্তাবলী কেন্দ্র আরোপ করেছে, সেটা ক্ষমতা প্রদর্শন ছাড়া কিছুই নয়। গায়ের জোরে রাজ্যগুলির উপর এরকম শর্ত আরোপ করা যায় না। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে নতুন আ‌ইন এনে রাজ্যের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ন্যূনতম জ্ঞান থাকলে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। মুখ্যমন্ত্রীর মতে এভাবে দেশের সব সম্পদ কেড়ে নিচ্ছে এই ‘জুমলা’ সরকার। মমতা আক্রমণাত্মক সুরে তিনি বলেছেন, আর্থিক প্যাকেজে সাধারণ মানুষের জন্য শুধুই মিথ্যাচার আর ধাপ্পাবাজি ছাড়া আর কিছু নেই।
বস্তুত আজ ঘোষিত সিদ্ধান্তে কেন্দ্র বনাম রাজ্য সংঘাতই তীব্র হতে চলেছে। অন্যদিকে, অর্থমন্ত্রী আজ হিসেব কষে দেখিয়েছেন, আজ তিনি যে সুরাহার ব্যবস্থা করেছেন, তার জেরে রাজ্যগুলি অতিরিক্ত ৪ লক্ষ ২৮ হাজার কোটি টাকা আয় করতে পারবে। আজকের প্যাকেজ ঘোষণায় গ্রামীণ কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দুটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। গ্রামীণ কর্মসংস্থানের চাহিদা মেটাতে মোদি সরকার ভরসা রাখছে ইউপিএ আমলে চালু হওয়া ১০০ দিনের কাজের গ্যারান্টি প্রকল্পে। ওই প্রকল্পে অতিরিক্ত ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। করোনার সঙ্কটে দেশজুড়ে সবথেকে বড় সঙ্কট দেখা দিয়েছে জীবাণুবাহিত রোগের চিকিৎসাকেন্দ্র চিহ্নিত করায়। তাই করোনা থেকে শিক্ষা নিয়ে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, দেশের প্রতিটি জেলায় (৭৩৩টি জেলা) জীবাণুবাহিত রোগের একটি করে চিকিৎসাকেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি প্রতিটি ব্লকস্তরে নির্মিত হবে একটি রোগনির্ণয় কেন্দ্র। এগুলিতেও আহ্বান করা হচ্ছে বেসরকারি সংস্থাকে।
আজও ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন প্যাকেজ। সেই প্যাকেজ অনুযায়ী কোনও সংস্থা করোনার সময় ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে আগামী এক বছর ঋণখেলাপির তকমা দেওয়া হবে না। শিক্ষাক্ষেত্রে আজ ঘোষিত প্রকল্পের নাম দীক্ষা। এই প্রকল্পে ডিজিটাল ও অনলাইন ক্লাসে জোর দেওয়া হয়েছে। ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন কোর্স চালু হবে। সরকার চালু করছে প্রধানমন্ত্রী ই বিদ্যা প্রকল্প এবং ওয়ান নেশন ওয়ান ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। যা রূপায়িত করতে সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে টাটা স্কাই ও এয়ারটেল ডিটিএইচকে। অর্থাৎ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্প সব ক্ষেত্রেই সরকারের প্রধান সহযোগী কর্পোরেট সেক্টর।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Lockdown4, #Mamata Banerjee, #Narendra Modi, #Nirmala Sitharaman

আরো দেখুন