কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

কোভিডে গাফিলতি নিয়ে বেনজির বিক্ষোভ-অবরোধ কলকাতা পুলিশের কমব্যাট ব্যাটালিয়নে

May 20, 2020 | 2 min read

বেনজির বিক্ষোভ কলকাতা পুলিশের কর্মীদের। মঙ্গলবার রাতে এজেসি বোস রোডে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের ভিতরে এবং বাইরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কলকাতা পুলিশের কমব্যাট ব্যাটালিয়নের জওয়ানেরা। বিক্ষোভ থামাতে গিয়ে নিগৃহীত হন ডিসি (কমব্যাট ব্যাটালিয়ন) এন এস পল। দীর্ঘ ক্ষণ এজেসি বোস রোড, ডি এল খান রোড অবরোধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অব্যবস্থা ও অমানবিক আচরণে অভিযোগ তুলেছেন বিক্ষোভকারী জওয়ানেরা।

সম্প্রতি পিটিএস-এ কমব্যাট ব্যাটালিয়নের এক এএসআই-এর কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে। বিক্ষোভকারী জওয়ানদের দাবি, এর পর ব্যারাকে আরও তিন জনের কোভিড ধরা পড়েছে। তাঁদের অভিযোগ, করোনা রুখতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পিটিএস-এ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এমনকি, মানা হচ্ছে না প্রয়োজনীয় সুরক্ষাবিধিও। পর্যাপ্ত পরিমাণে পিপিই এবং মাস্ক পর্যন্ত দেওয়া হয়নি তাঁদের। আরও অভিযোগ, কোভিড-আক্রান্ত পুলিশকর্মীর সংস্পর্শে আসা বাকি পুলিশকর্মীদেরও কোয়রান্টিনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। বিক্ষোভকারী এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘কোয়রান্টিনে না পাঠানোর ফলে আরও তিন জন সংক্রমিত হয়েছেন। আমাদের আশঙ্কা ব্যাটালিয়নের আরও জওয়ানেরা সংক্রমিত হবেন।’’ পিটিএস-এ ব্যারাক ছাড়াও বহু পুলিশকর্মীরা সপরিবার থাকেন। এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বার বার সামাজিক সুরক্ষাবিধি মেনে চলার কথা বলছেন। আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কোয়রান্টিনে পাঠানোর কথা বলছেন। অথচ আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এই নির্দেশের কোনওটাই মানছেন না।’’ বিক্ষোভকারীদের আশঙ্কা, এই ভাবে সুরক্ষাবিধি ভাঙলে গোটা পিটিএস-এ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে। এই বিক্ষোভকারী জওয়ানেরা অতিরিক্ত কাজের চাপ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

KP
কোভিডে গাফিলতি নিয়ে বেনজির বিক্ষোভ-অবরোধ কলকাতা পুলিশের কমব্যাট ব্যাটালিয়নে

কলকাতা পুলিশের এই কমব্যাট ব্যাটালিয়ন একটি বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত বাহিনী। জঙ্গিহানা বা নাশকতার বিরদ্ধে লড়াই করার জন্যই তৈরি করা হয়েছিল এই বাহিনী। শহরের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা (ভাইটাল ইনস্টলেশন)-র নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে এই কমব্যাট ব্যাটালিয়ন। এ ছাড়াও বড় ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলা করার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয় এই বাহিনীকে। যেমন, মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পর উদ্ধারকাজে ব্যবহার করা হয়েছিল এই ব্যাটালিয়নকে।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গত প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন  ডিভিশনে কনটেনমেন্ট জোনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তাঁদের ব্যবহার করা হচ্ছে। এবং নির্ধারিত সময়ের থেকেও অনেক বেশি সময় তাঁদের ডিউটি করতে হচ্ছে। এই সমস্ত অভিযোগ নিয়েই এ দিন রাতে পিটিএস-এর ভিতরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন জওযানদের একাংশ। তাতে শামিল হন অনেকের পরিবারের সদস্যেরাও। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বিক্ষোভ থামাতে জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলতে যান ডিসি (কমব্যাট ব্যাটেলিয়ন) এন এস পল। প্রত্যক্ষদর্শীদের আরও দাবি, ডিসি-র সঙ্গে কথোপকথনের মধ্যেই বচসা শুরু হয়ে যায়। পিটিএস-এর গেট ছাড়িয়ে সেই বিক্ষোভ বাইরে এসএসকেএম-এর গেট পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের হাতে রীতিমতো নিগৃহীত হন ডিসি। জওয়ানদের অভিযোগ, নিচুতলার পুলিশকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এই ঊর্ধ্বতন আধিকারিক। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশের বেশ কয়েক জন শীর্ষ আধিকারিক। তাঁদের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নেন জওয়ানেরা। তবে বিক্ষোভকারীদের একাংশ দাবি করেন, তাঁরা গোটা বিষয়টা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন কলকাতা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকেরা। এই ঘটনা সম্পর্কে কলকাতা পুলিশের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে শীর্ষকর্তাদের ইঙ্গিত, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#WestBengal, #Coronavirus, #Kolkata Police, #Combat Battalion

আরো দেখুন