ঘূর্ণিঝড়ে চাষে ব্যাপক ক্ষতি একাধিক জেলায়
আম্পানের তাণ্ডবে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হল বেশ কিছু জেলায়। চাষিদের মাথায় হাত বীরভূম জুড়ে। মাঠে না কাটা পাকা ধান এবং কেটে জমিতে পড়ে থাকা ধান ছিল প্রায় ৫৮ হাজার হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে ৪৪, ৬২৫ হেক্টর জমির ধানই জলের তলায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকা ধান। টাকার অঙ্কে প্রায় ৩০৮ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে, জেলায় ধান সমেত অন্যান্য ফসল মিলে মোট ক্ষতির পরিমাণ ৪৬১ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা।
জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর জেলায় বোরো চাষ হয়েছিল ৯৮ হাজার ৯৯১ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে মাত্র ৪৫ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছিল। মাঠে না কাটা এবং কেটে জমিতে পড়ে থাকা ধান ছিল প্রায় ৫৮ হাজার হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে ৪৪,৬২৫ হেক্টর জমির ধানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
একই ভাবে পূর্ব বর্ধমান জেলায় আম্পানের প্রভাব পড়েনি। যেটুকু সামান্য পড়েছে তার জেরেই শস্যগোলা বর্ধমানের দমবন্ধ অবস্থা। বোরো ধান ও তিল চাষের প্রাথমিক ক্ষতির যে হিসেব জেলা প্রশাসনের কাছে এসেছে তারই পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকা। এর সঙ্গে কাঁচাবাড়ি-সহ অন্যান্য ক্ষতির হিসেব মেলালে এখনও পর্যন্ত জেলায় তিন থেকে সাড়ে তিনশো কোটির ক্ষতি হয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে গলসি-১ ও ২, আউশগ্রাম-১ ও ২, ভাতার, মঙ্গলকোট, কালনা ১, বর্ধমান-১ ও ২ এবং মন্তেশ্বর ব্লকে। চাষের জমি পুকুরে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি বিডিও, ব্লক কৃষি আধিকারিক সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরাও ঘুরে দেখেন।
আম্পানের হাত থেকে রক্ষা পেল না মুর্শিদাবাদও। জেলার জলঙ্গি ব্লক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খরগ্রাম ও নবগ্রাম ব্লকের ধানের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। অন্য দিকে, বাঁকুড়া জেলায় বোরো, তিল, সব্জি, পান মিলিয়ে প্রায় ৩৪৬ কোটি টাকার খরচ হয়েছে বলে জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন ব্লক থেকে পাওয়া হিসেব অনুযায়ী ১৮ হাজার হেক্টর বোরো ধান, ১৫ হাজার হেক্টর তিল, ১১৭১ হেক্টর সব্জি, ১৬০০ হেক্টর ফলের বাগান ও ৭৬ হেক্টর জমির পান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।