ভারতে এসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে করোনা ভাইরাস
ভারতে কোভিড-১৯ ভাইরাসের আরও বেশী সংক্রমণ নিয়ে সতর্কবার্তা দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির গবেষকরা। ভারতে ৮২ ধরনের করোনা ভাইরাসের জিন বিশ্লেষণ করে তার ৫০ শতাংশের মধ্যে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন অঞ্চলের হঠাৎ পরিবর্তন (যাকে চিকিৎসাশাস্ত্রে ডি৬১৪জি বলে) লক্ষ্য করা গিয়েছে। যা কোভিড-১৯-কে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলছে।
এর জেরেই দেশে এত বেশী ছোঁয়াচে হয়ে উঠেছে করোনা ভাইরাস। ওই গবেষকদের অন্যতম সদস্য টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের প্রাক্তন ছাত্র জানান, ভারতে কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রোটিনগত পরিবর্তন খুবই উদ্বেগের। অস্ট্রেলিয়ার কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশনের ভারতীয় বংশোদ্ভূত অধ্যাপক এস এস ভাসান এবং তাঁর সহকর্মীরা দাবী করছেন, ভারতের ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের ৮২টি প্রকারের প্রায় ৫০ শতাংশের মধ্যে এই প্রোটিনগত পরিবর্তন হচ্ছে।
যদিও, সমগ্র বিশ্বে ভাইরাসের প্রোটিনগত পরিবর্তনের হার প্রায় তিনভাগের দুই ভাগ। করোনার এই স্পাইক প্রোটিনই মানুষের শরীরে ঠাঁই খুঁজে নেয়। যদিও এটাই আরএনএ ভাইরাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
সার্স-কোভ-২ ভাইরাস যে জিনের গঠন বদলাচ্ছে, বিজ্ঞানীদের কাছে তা এখন অনেকটাই পরিষ্কার। এক্ষেত্রে সার্স-কোভ-২ এতবার জিনের গঠন বদলেছে, যে তার আসল উৎস খুঁজে পাওয়াই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে গবেষকদের কাছে। করোনা ভাইরাসের এই প্রোটিনগত পরিবর্তনের পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছেন গবেষকরা।
অনেক সময় করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গ প্রথমদিকে ধরা পড়ে না। যার ফলে আক্রান্ত রোগীকে চিহ্নিত করা যেমন মুশকিল হয়ে পড়ে, তেমনই করোনা সংক্রমণ রোখা অসম্ভব হয়ে যায়। এই সমস্যার সমাধান বের করেছেন আমেরিকার কয়েকজন গবেষক। তাঁদের বক্তব্য, করোনা ভাইরাস শরীরে বাসা বাঁধার তিনদিনের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির ঘ্রাণশক্তি চলে যায়। কোনও ব্যক্তির এমন লক্ষ্মণ দেখলে তাঁকে সহজেই করোনা আক্রান্ত হিসেবে চিনতে পারবেন গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
১০৩ জন করোনা রোগীর শারীরিক লক্ষ্মণ এবং চারিত্রিক পরিবর্তন ছ’সপ্তাহ ধরে পর্যালোচনা করেছেন গবেষকরা। তাঁদের সেই পর্যালোচনার ফলাফল সম্প্রতি একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকদের বক্তব্য, ১০৩ জনের মধ্যে অধিকাংশই ঘ্রাণশক্তি আংশিক অথবা সম্পূর্ণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। আর সেটা ঘটে করোনা আক্রান্ত হওয়ার তিন থেকে চারদিনের মধ্যেই।