১২০ কোটি ক্ষতির মুখে সুন্দরবন
লকডাউনে চাষাবাদ, মাছ ধরা, মধু সংগ্রহ— কিছুই হয়নি। এ বার মাথার চালটুকুও হারিয়ে ফেললেন সুন্দরবনবাসী। সুপার সাইক্লোন আম্পানের অভিঘাতে কার্যত ধ্বংসের স্তূপে দাঁড়িয়ে বাদাবন ও তার অধিবাসী। পরের পর বাঁধ ভেঙেছে, বিট অফিস ক্ষতিগ্রস্ত, জেটি ভেঙেছে, নষ্ট হয়েছে জঙ্গলের ধারে থাকা নাইলন ফেন্সিং।
তবু তার মধ্যে আপাত স্বস্তির জায়গা দুটি। এখনও পর্যন্ত সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের বসতি এলাকা থেকে বড় কোনও প্রাণহানির খবর আসেনি। আর বাদাবনের সম্রাট বাঘও হয়তো উম্পুনের থাবা থেকে নিজেদের বাঁচাতে পেরেছে।
দু’দিন পরেও গোটা সুন্দরবনের পরিস্থিতি ঠিক কতটা ভয়াবহ, তার স্পষ্ট হিসাব এখনও বন দপ্তরের হাতে আসেনি। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিধ্বস্ত। কোনও বসতি এলাকায় ঘরের মাথায় চাল নেই। শনিবারের আগে তাই সরকারের কাছে ক্ষতির প্রাথমিক রিপোর্টও জমা দিতে পারছেন না বনাধিকারিকরা।
বন দপ্তর সূত্রে খবর, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ও বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ মিলিয়ে কমপক্ষে ১২০ কোটি টাকার পরিকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। সেই অঙ্কটা আগামী ক’দিনে সামগ্রিক চিত্র জানার পর আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। এর জন্য ড্রোনের সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে।
সুন্দরবনের বাঘ জল-জঙ্গলে অভ্যস্ত। জঙ্গলের কোর এরিয়ায় অনেক উঁচু জায়গা আছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় সমুদ্রের জল ভিতরে ঢুকলে বাঘ ও অন্য জন্তু সেখানেই ঠাঁই নেয়। ঘন ম্যানগ্রোভে ঝড় আর সমুদ্রের জল বাধা পায় বলে জঙ্গলে তার গতিও কম থাকে। তাই বার বার সুন্দরবনে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়লেও বাঘেদের গায়ে বড় আঁচড় লাগে না।’