বিদ্যুৎ-জলের হাহাকারে মাস্ক ভুলেছে মানুষ
প্রায় ৫০ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে, বিদ্যুৎ নেই। খাবার জল নেই। মোবাইলে কানেকশন নেই। বাড়ির সামনে বা বাড়ির উপরে গাছ পড়ে যাতায়াত স্তব্ধ। আম্পানের নজিরবিহীন অভিঘাতে শহর কলকাতার বিরাট অংশের মানুষ ত্রস্ত, বিরক্ত, ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভ এবং জলের চাহিদা উপচে পড়ছে রাস্তাতেও। জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ, এমনকী অবরোধও। এর মধ্যেই লকডাউনে ছাড়ের ফলে রাস্তায় গাড়ির ভিড়ে যানজট।
কিন্তু পরিহাস এমনই, এক আতঙ্ক ভুলিয়ে দিচ্ছে অন্য আতঙ্ককে। করোনা-কালে যে নগরবাসী গত দু’মাস সচেতন ভাবে মাস্ক-গ্লাভস-স্যানিটাইজারে নিজেদের সুরক্ষা বলয়ে ঘিরেছিল, তারাই আজ মুখোশহীন! পাড়ার রাস্তা সাফাই বা জল তোলার লাইন বা বিক্ষোভের ভিড় — উম্পুনের পর সর্বত্রই ভেঙেছে সামাজিক দূরত্বরক্ষার শপথ।
শুক্রবার সকালেও ঘূর্ণিঝড়-বিধ্বস্ত কলকাতা ছিল স্থবির। যে প্রান্তেই যাওয়া যায়, সেখানেই গাছ উপড়ে বন্ধ রাস্তা। বিদ্যুতের তার, ডালপালার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের লাইনও। বেলগাছিয়া, দত্তবাগান, হাতিবাগান, শ্যামবাজার, গিরিশ পার্ক থেকে দক্ষিণের টালিগঞ্জ, যাদবপুর, ভবানীপুর, কালীঘাট, পূর্ব কলকাতার ইএম বাইপাস সংলগ্ন এলাকা— সর্বত্র একই ছবি।
আম্পান পরবর্তী শহরের অচলাবস্থার অন্যতম কারণ এই গাছ পড়ে যাওয়া। শহরজুড়ে কয়েক হাজার গাছের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে তার ছিঁড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ইন্টারনেটের অপ্রাপ্তির নেপথ্যেও গাছকেই দায়ী করা হচ্ছে। পুরসভা দিনরাত এক করে কাজ করলেও, স্বাভাবিক ভাবেই এত গাছ দু’দিনে সরিয়ে ফেলা সম্ভব হয়নি।