আম্পানের জেরে সব্জির দাম বেড়ে গেল একলাফে
আশঙ্কা সত্যি করে আম্পানের পরেই একলাফে সব্জির দাম বেড়ে গেল অনেকটা। এতে মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্তরা সমস্যায় পড়েছেন তো বটেই, সবথেকে সমস্যায় তাঁরা, যাঁদের রোজগার এই লকডাউনে পুরোপুরি বা প্রায় বন্ধ। গড়ে প্রতিটি সব্জির দাম ৫০ শতাংশ বেশি বেড়েছে। যে কাঁচালঙ্কা প্রায় সব রান্নায় লাগে, তার দাম বেড়েছে ১০০ শতাংশ! তবে এই অবস্থায় স্বস্তির খবর একটিই। আলু এবং পেঁয়াজের দাম কিন্তু বাড়েনি।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে বাজারে পটলের দাম ছিল ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি। এ দিন সেই পটল বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা করে। সপ্তাহখানেক আগে ঢেঁড়সের দাম ছিল ১৫ টাকা, বেগুন ২৫ টাকা, ঝিঙে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, লঙ্কার দাম ছিল ১৮ থেকে ২০ টাকা প্রতি কেজি। শনিবার ঢেঁড়স ২৫ টাকা, বেগুন ৩৫ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, কাঁচালঙ্কা ৪০ টাকা কেজিতে বিকিয়েছে।
কোলে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, মূলত যে সব জেলা থেকে শহরে আনাজ আসে, তার বেশির ভাগই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অধিকাংশ চাষের জমি জলের তলায়। কোথাও ফসল উড়ে জমি বিলকুল ফাঁকা। ফলে জেলা থেকে সব্জি আসতে পারেনি শহরের বাজারগুলিতে। শুধু তা-ই নয়, সোমবারের মধ্যে যদি জমির জল না-নামে, তা হলে আনাজের দাম আরও বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিক্রেতারা।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার কৃষি বিশারদ দেবাশিস মণ্ডল জানান, কলকাতা শহরে সব্জি মূলত আসে বনগাঁ, বসিরহাট, নদিয়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে। উম্পুনে এই জেলাগুলিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঢেঁড়স, পটলের ক্ষেত একেবারে জলের তলায়। পেঁপে গাছ অবশিষ্ট কিছু নেই। দু’দিনের মধ্যে জমির জল না-নামলে সব সব্জি পচে যাবে বলে তাঁর আশঙ্কা।
কোলে মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কমল দে বলেন, ‘লকডাউনের মধ্যেও বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন ২৫০ ট্রাক সব্জি আসত। কিন্তু বৃহস্পতিবার মাত্র ৫০ ট্রাক এসেছে। শুক্রবার এসেছে ১২০ গাড়ি। এর মধ্যে ঝড়ের রাতে রাস্তায় আটকে থাকা গাড়িও ছিল। শনিবার আনাজের দাম যা বেড়েছে, সেটাই শেষ নয়। সোমবারের মধ্যে জলে ডুবে যাওয়া সব্জির ক্ষেত বাঁচানো না-গেলে এই দাম আরও বাড়বে।’