কন্যাশ্রীর টাকা দুস্থদের দান, ছাত্রীর পাশে পরমব্রত
করোনা সংক্রমণের জেরে লকডাউন চলছে সারা দেশে। কলকারখানা বন্ধ। লোকদের কাজকর্মও লাটে উঠেছে। এই অবস্থায় চারিদিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে সংকট চলছে। উদয়নারায়ণপুরে কুরচি শিবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের টোকাপুর এলাকার বাসিন্দা বছর একুশের তরুণী জাসমিন খাতুন ওরফে রিনাও দেখেন এলাকার লোকেদেরও একই দশা।
পাড়ার লোকেরা দুমুঠো খাবারের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন। চোখের সামনে তা দেখে স্থির থাকতে পারেননি উদয়নারায়ণপুর মাধবীলতা মহাবিদ্যালয়ের বিএ তৃতীয় বর্ষের এই ছাত্রীটি। কিন্তু কীভাবে তিনি দুস্থদের পাশে দাঁড়াবেন? তাঁর নিজস্ব সম্বল তো মাত্র কন্যাশ্রীর টাকা। শেষমেশ প্রতিবেশী দুস্থ মানুষগুলোর মুখে হাসি ফোটাতে তিনি নিজের কন্যাশ্রীর ২০ হাজার টাকা দিয়ে খাদ্য সামগ্রী কিনে তা বিতরণ করলেন।
এদিকে তাঁর এই দানের কথা তাঁর অজান্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। তা দেখে জাসমিনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ আম আদমি থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তারা এমনকি সেলিব্রিটিও। শুধু তাই নয়, অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় আবার ২৫ হাজার টাকা পাঠালেন জাসমিনের জন্য।
‘গ্রামের পূর্ব পাড়া, মল্লিকপাড়া, খাঁ পাড়া, হাজরাপাড়ার খেটে খাওয়া মানুষদের দুর্দশা লক্ষ্য করেছিলাম। তখনই ঠিক করি যেভাবেই হোক মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। ঠিক করে ফেলি সেজন্য কন্যাশ্রীর টাকাটাই খরচ করে ফেলব’, জানালেন জাসমিন। তাঁর কথায়, ‘যেমন ভাবনা তেমন কাজ। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করি। তারাও সম্মতি দেয়। আর দেরি করিনি।’
সেই টাকায় তিনি আলু, পিঁয়াজ, ডাল, ডিম, সয়াবিন কিনে এনে লোকজন জুটিয়ে সেই খাদ্যসামগ্রী প্যাকেটবন্দি করে ফেলে জাসমিন। তারপর তা দুস্থদের হাতে তুলে দেন জাসমিন। আবার কয়েক জনের হাতে নগদ টাকাও তুলে দেওয়া হয়। তবে এই দান করার ক্যামেরাবন্দি নিজেও করেননি, কাউকে তা করতেও দেননি তিনি। রীনার কথায়, এটা ঠিক হত না।
বিষয়টি নজরে আসে প্রখ্যাত অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে জানতে চান। হাওড়া গ্রামীণ পুলিশও খতিয়ে দেখে সত্য বলে জানায় পরমব্রতকে। তিনি আবার হাওড়া গ্রামীন পুলিশের মাধ্যমে দুস্থদের সাহায্য করার জন্য রিনার কাছে আরও ২৫ হাজার টাকা পাঠান। ওই টাকা শীঘ্রই জাসমিন পেয়ে যাবেন।