এক মাসে চাকরি গিয়েছে ১২ কোটির
দেশে এক মাসে কাজ হারানো মানুষের সংখ্যাটা এর থেকে বেশি বই কম নয়। বেসরকারি একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্কের এই সমীক্ষা রিপোর্ট চমকে ওঠার মতোই। অন্যদিকে, চলতি বছরে প্রায় ৪ কোটি ৯০ লক্ষ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মুখে পড়তে পারেন, যাঁর মধ্যে ১ কোটি ২০ লক্ষ শুধু ভারতেরই — এই তথ্য বিশ্বব্যাঙ্কের!
কিন্তু ‘সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি’ (সিএমআইই)-এর পরিসংখ্যান বলছে, একমাসেই সংখ্যাটা ১২ কোটির বেশি, কাজেই দারিদ্র যে বিশ্বব্যাঙ্কের হিসাবের চেয়েও কয়েকগুণ বাড়বে, তার ইঙ্গিত এই রিপোর্টেই স্পষ্ট।
করোনা-পরিস্থিতিতে ভারতের অর্থনীতির হাল যে ক্রমেই খারাপ হচ্ছে, সে সতর্কবার্তা আগেই শুনিয়েছে মুডিজ, গোল্ডম্যান স্যাক্সের মতো সংস্থা। আগামী অর্থবর্ষে সম্ভাব্য আর্থিক বৃদ্ধির হার শূন্যে নেমে যাওয়ার পূর্বাভাসও মিলেছে। কিন্তু গত একমাসে পরিস্থিতি যে আরও কতটা খারাপ হয়েছে, তা বুঝিয়ে দিল সিএমআইই-এর রিপোর্ট।
গত এপ্রিলে ভারতের ২৭টি রাজ্যের ৫,৮০০ টি বাড়িতে গিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছিল সিএমআইই। তাতে দেখা গিয়েছে, লকডাউনের জেরে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছে গ্রামীণ অর্থনীতি। সেখানে ৮০ শতাংশ বাড়ির মানুষ কাজ হারিয়েছেন, কমেছে আয়। যারা কাজ হারিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই দিনমজুর বা ছোট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, ফুটপাথের হকার, নির্মাণকর্মী বা রিকশাচালক।
সবচেয়ে বেশি দরিদ্র নাগরিকের তকমা বহুদিন বহন করছে ভারত। শুধু সিএমআইই নয়, বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্টও বলছে, গত ১০ বছরে অর্থনৈতিক উন্নতির জোরে সেই তকমা ঘোচানোর পথে অনেকটাই এগিয়েছিল ভারত, কিন্তু করোনা সংক্রমণ রুখতে মার্চ থেকে টানা লকডাউন সেই চেষ্টায় পুরোপুরি জল ঢেলে দিল।
গ্রামাঞ্চলের অর্থনীতি ফেরাতে কৃষকদের সহজ শর্তে ঋণ, গরিবদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকার আশ্বাস মোদী সরকার দিয়েছে বটে, কিন্তু সেই সব সরকারি সুবিধা পাওয়ার জন্য প্রয়োজন নির্দিষ্ট কিছু নথিপত্র, যা গ্রামের অধিকাংশ গরিব মানুষেরই নেই!